আজকের কবিতাটি কবি সন্তোষকুমার মাজী -এর লেখা একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা আমৃত্যু রেসের ঘোড়া।
হামাগুড়ি দিয়ে শুরু হয় রেস--- তারপর শেষ অথর্ব অকর্ম সেই বালখিল্য হয়ে আমৃত্যু রেসের ঘোড়া মৃত্যুরেখা ছুঁতেই জন্মেছি মাঝপথে চলন বলন হাজার আনন্দবোধ, হাজার বিষাদ--- বিভ্রমের মতো বেঁচে থাকা অমোঘ অনেক স্মৃতি--- প্রেম অপ্রেমের খেলা মৃত্যুদৌড়ে নাম লেখা হলে হাঁটাচলা অনেক সহজ সাধ্য থাকে অজস্র কর্মের, অসাধ্যও থাকে কিছু দিনরাত ভরন্ত সংসারে অজস্র টানাপোড়েন কত স্পর্ধা থাকে, অহংকার রূপ নিয়ে, অর্ঘ নিয়ে যশ নিয়ে, বুদ্ধি নিয়ে; থাকে হরেকরকম নেশা; কোষ বিভাজন নিরুপায় হলে নিঃসহায় বলিরেখা ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়--- জ্ঞানের প্রাবল্য মুছে যায় অধীত বিদ্যাও ক্রমে আবছা হয়--- মনে হয় পৃথিবীর ক্রীড়নক হয়ে বেঁচে থাকা আর তো যায় না, সময়-হয়েনা শুধু হেঁকে যায়---' চলো, মৃত্যু- দৌড়ে চলো'। চোখে ছানি পড়ে, কখনো বা দৃশ্যমান থাকে; দৃশ্যের পরিধি ক্রমে ছোট হয় বলীয়ান ভালোবাসা, সেবা ভাব ক্রমান্বয়ে বেদখল হয়, মনে হয় এতটুকু সেবা পাই,শুশ্রুষার ছোঁয়া উদ্ভিন্ন সবুজ দেখে মাঝে মাঝে বড় ঈর্ষা হয়, সত্তর বসন্ত আসে, কখনো আসে না বিভাজিত কোষ ক্রমে ক্লান্ত হয়, শ্রান্ত হয় মন ও মত্ততা শরীরের সব তেজ ক্রমে মুছে যায়! মৃত্যুরেখা ছুঁতে সকল হাতের পেশী ক্রমশ: আলগা হয় বাঁচার আকাঙ্খা থাকে বড় বেশী শরীর নিশ্চেষ্ট হয় তবু সেই ঠান্ডা হিম মৃত্যুরেখা ছুঁতে বেঁচে থাকতে হয় আমৃত্যু রেসের ঘোড়া মাথা রেখে ঘাসের জামিমে।