বাইশে শ্রাবণ
বরুণ হালদার
পঁচিশে বৈশাখে উদিত রবি
অস্ত গেল বাইশে শ্রাবণ ।
শ্রাবণের শীতল জলে পুষ্ট প্রকৃতি,
শোকে মুর্ছা মান,
চারিদিক বিবর্ণ তখন।
ঠিক তখন দুপুর বারটা দশ,
থমথমে আকাশ বাতাস,
মধ্য গগনে থেকেও রবির মুখ ভার।
রবির প্রস্থানে নেমে এলো,
অমানিশার ঘোর অন্ধকার।
হায় হায়, একি হল, একি হল,
এই বুঝি নিভে গেল,
সহস্র রবির আলো।
যে আলোর আলোয়,
অজ্ঞান রুপী অন্ধকার দূর করে,
লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে
জ্বেলেছ জ্ঞানের আলো ।
তোমার অক্ষর অমৃতের ধারা,
সমগ্র ভূ-ভাগে,
সাত সমুদ্র,
বাকি একভাগ ভূমি ।
সেকাল একাল,
সাহিত্য জগতে রাজাধিরাজ,
মহা হিমালয় তুমি।
শোকের পরে শোক জীবনে !
সবই মিথ্যা আফসোস,
তুমি বুঝেছিলে,
মৃত্যুতো, মৃত্যু নয়,
এ তো আসা যাওয়ার খেলা।
পৃথিবীতে সীমিত সময়,
কতো কিছু দিতে হবে,
তাইত শোক ভুলে,
কলমে কাটতো তোমার বেলা।
উজাড় করে সবকিছু দিয়ে,
চলে গেছ অমৃতলোকে,
আমাদের ছেড়ে।
নয়নে তোমায় দেখার সৌভাগ্য হয়নি,
তোমার সাজানো সমুদ্রে,
ডুবদিয়ে দেখি,
তোমায় প্রাণভরে।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে নিজের কাছে,
রবীন্দ্র সমুদ্র অতল,
কুল কিনারা নাই ।
তাই তো বলি প্রাণের ঠাকুর,
তোমায় বোঝা,
এক জন্মে আমার সাধ্য নাই।
বিশ্ব বোধে জাগ্রত মহা প্রাণ,
বিস্বয়কর প্রজ্ঞা,
জ্ঞান গঙ্গার প্রবাহ থেমে গেল চিরতরে ।
চলেগিয়েও তোমার হলো না যাওয়া,
হে কবি গুরু, জাগ্রত তুমি জগৎজুড়ে।
দুঃখের দিনে,
কিংবা বিচলিত ক্ষনে,
গীতাঞ্জলি, গীতবিতানের পাতা ছুঁয়ে,
জুড়াই মন প্রাণ।
তোমায় পূজিতে ঠাকুর,
তোমার কবিতা,
গাই তোমারই গান।
বাইশে শ্রাবণের পূন্য লগ্নে
তোমার পুষ্পরথ পৌঁছায় অমৃত ধাম।
হে-গুরুদেব,
অশ্রু সিক্ত নয়নে জানাই তোমায়,
শত সহস্র প্রণাম।
…