একটি বন্দি পাখির কষ্ট
-

শেয়ার করুন

আমি শুধু থাকি তোমাদের অপেক্ষায় সারা দিনরাত জুড়ে,

তোমাদের সাথে কথা হয় দিনে দুইবার।

তোমরা আসো সেই ভোরবেলাতে,

মুক্ত আকাশে উড়ে যাওয়ার আগে

দেখা করে যাও আমার সাথে।

কিছু কথাও বলো তখন,

চলে তোমাদের সাথে আমার ক্ষনিকের সুখ, দুঃখের কথোপকথন।

তারপর তোমরা হয় খাবারের খোঁজে,

নয়ত বাসা তৈরির খড়-কুটো সংগ্ৰহে,

অথবা খোশ মেজাজে গল্প করার জন্যে,

উড়ে যাও আমার সামনে দিয়ে দল বেঁধে।

তোমাদের উড়ে যাওয়ায়

আমার খাঁচার পাশে পড়ে থাকে কিছু পালক,

আর সেই ক্ষনিকের দমকা হাওয়া।

তোমাদের উড়ে যাওয়া দেখি আমি।

আমার ইচ্ছা হলেও পারি না।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবি-

একদিন জীবন আমার হবে শেষ

এই খাঁচার ভিতরেই।

তোমাদের মতন স্বাধীন ভাবে প্রকৃতির মাঝে নয়।

আবার তোমরা বাড়ি ফেরো সেই সন্ধ্যার মুখে।

এই সারা দিন ধরে অপেক্ষায় থাকি তোমাদেরই।

বাসায় যাওয়ার আগে আর একবার দেখা করো আমার সাথে।

তোমরা বলো আমায়-

সারাদিনের কত আনন্দের,

কত খেলাধুলার কথা।

আমি তখন আর কী বলি?

এই খাঁচার ভিতর মালিক কতবার জল দিল,

কতবার খাবার দিল।

আমি এও বুঝি তোমাদের কাছে আমি শুধুই করুণার পাত্র,

তোমাদের খুঁটে খাওয়া, আনন্দ, হাসি, খেলার সঙ্গী হতে পারব না কোনোদিন।

তারপর তোমরা চলে যাও।

আমি থাকি আবার কখন তোমরা আসবে সেই ভোরে।

জানি, একদিন আমার এই জীবন

শেষ হবে

শুধুমাত্র ক্ষুদ্র শরীরটুকু পড়ে থাকবে এই খাঁচার ভিতর।

আমার এই মর জীবনের বাইরে তখন যে জীবন হবে

সেইটা নিয়েই উড়ে বেড়াব তোমাদের সাথে।

— অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী 


শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন