চাইলেই হাঁড়ির বুকে ফেলে দিতে পারি দু’মুঠো জীবন।
স্যাঁতস্যাঁতে মনের ভেতর কখনোও কখনোও ভেসে ওঠে
আধ-খাওয়া মানচিত্র-
ঐখানে আমাদের একটা নদী ছিলো!
সাধ করে তাকে নাম দিয়েছিলাম রূপমতী।
আর ঐ জায়গায় কাশফুল নিয়ে বসতো আমাদের মন।
এখানে ধানের গোলা, এখানে মসজিদ আর
এই বাঁকা রেখাটার পাশে আমাদের জন্মভিটে। মনে আছে?
মানচিত্রের পাশে মায়ের হাসি ছড়িয়ে পড়ে।
আর মা ঘুমিয়ে পড়লেই তার আনাচে-কানাচে আমি লিখে রাখি!
এসো অভাব, বসো অভাব।
বাবা হাত-জোড় করে বলে, একমাত্র তুমিই কোনোও অতিথি নও।
ভুল করে বলে উঠি ভালো আছি। আজ কিন্তু খেয়ে যেও।
তারপর তিনটি জীবন বেড়ে দিই ভাতের থালায়।
এখন চাইলেও আমি কাউকে ‘ভুল’ শব্দ ধার দিই না। আসলে
প্রতিটা ভুলের ভেতর কিছু না বলা থেকে যায় –
প্রতিটা যন্ত্রণার ভেতর এক একটা আকাশ।
ধরো এইমাত্র একটা কবিতা লিখতে বসেছি!
জোছনা, নদী, পালক, নূপুরের পাশাপাশি
বছর উনিশের এক ছোকরীকেও ঠেসে দিয়েছি কবিতার ভেতর।
দূরে ধানক্ষেতে লিখে রেখেছি একটা তেইশের ছেলেকে।
এখন ইশারা আঁকছি।
এবার খালি মহব্বতের মেহ্ফিল সাজাবো বলে
বৃষ্টি লিখবো ভাবতেই
সেই উনিশ বছর এগিয়ে এলো আমার দিকে।
কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে বললো আরে এসব বয়সে শরীর লেখো শরীর।
আজ প্রেম লিখলেও দু’দিন পর সেই তো লিখবে
মিছিল আর মোমবাতির কথা। তার চেয়ে
উনিশ আর তেইশের ভেতর একটা উপভোগ জুড়ে দাও দেখি।
তোমরা তো আবার ভালোবাসা শব্দের বানান জানো না।
তোমরা জানো না হাতে হাত রেখে জীবন লিখতে।
তোমরা শেখোনি গভীরতার তল মাপতে গেলে মন প্রয়োজন।
আমার গলা শুকিয়ে আসছে ভীষণ।
আমি দেখতে পাচ্ছি আমার কবিতার ভেতর
নগ্ন দেহে নেচে যাচ্ছে দুটি আধপোড়া কঙ্কাল-
আমি দেখতে পাচ্ছি, বাজখেকো গাছটার কোঠরে
আমার সাধের উনিশ আর তেইশ কেমন ধীরে ধীরে
প্যাঁচা আর ইঁদুর হয়ে যাচ্ছে।