— তুমি এলে আমার কাছে দশ বছর পর। আচ্ছা, এতগুলো বছর কেমন করে কাটালে আমায় ছাড়া?
আমার কথা মনে পড়তো?
— এসব জিজ্ঞাসা করতে হয়? তোমায় ছাড়া থাকতে পারি একা একা? কিন্তু কী করব বলো, আমার যে কিছুই করার ছিল না। শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম, তিনি যেন আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়ে দেন।
— এবার থেকে আমরা একসাথে থাকব। আর কখনও আলাদা হবো না।
— সত্যি, তোমায় কাছে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এখন সেই আমার একাকী দিনযাপনের কথাগুলো মনে পড়ছে। আমি তোমার ফটো বুকে জড়িয়ে ধরে সারারাত কাঁদতাম। সারা ঘর বিষণ্ণ মুখে ঘুরতাম। শুধু মনে হতো এই তুমি আমার কাছেই আছ, আমার ঠিক পাশেই আছ, কিন্তু না, কোথায় কে? আর ভাবতে চাইনা ওসব।
— আর ভাবতে হবেও না। এখন থেকে শুধু আমি আর তুমি। ঈশ্বরকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই যে আমার একেবারে পাশেই তোমার জায়গা করে দিয়েছেন। সবই তাঁর ইচ্ছা।
— ঠিক বলেছ।
— আচ্ছা, ঐ তারাভরা আকাশের দিকে তাকাও।
কালপুরুষকে চিনতে পারছ?
— কই না তো?
— কীরকম চারিদিকে একটা শীতল ভাব, বলো?
খুব ভালো লাগছে।
— কী বলছ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
— ঝিঁঝিঁর একটানা ডাক শুনতে পাচ্ছ? গাছগুলো দ্যাখো যেন কালো দৈত্যের মতো দাঁড়িয়ে আমাদের দেখছে।
— কেন এইসব প্রশ্ন করছ? তোমার একটা কথাও বুঝতে পারছি না।
— কেন? আমি যা দেখছি তুমি তা দেখতে পাচ্ছ না?
— না। দশ বছর আগে তুমি এসেছিলে কবরে আর সেই দেহ এখনও থাকে? একেবারে মিশে গেছ মাটিতে। তাই সব দেখতে পাও। কিন্তু আমার তো তা নয়। আমি কীভাবে দেখব সবকিছু?
— অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী
২৯/০৬/২০২৩