প্রশ্ন
বরুণ হালদার
ছোট্ট ছেলেটা বাবার কাছে প্রশ্ন করে,
বাবা,
স্বাধীনতা বছরে কেন একবার হয় ?
নির্বাক মুখে বিস্ময় চোখে, বাবা ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়।
বলোনা বাবা,
রোজ কেন হয় না স্বাধীনতা,
রোজ রোজ কত চকলেট পাওয়া যেত।
মলিন মুখে বাবা বলে,
শোন বাবা,
স্বাধীনতা কি,
আমি চোখে দেখিনি কোনদিন,
দেখেছি প্রতিদিন আমরা সবাই পরাধীন।
খিদের জ্বালায় শিশু মায়ের কাছে,
টিউশন ফেরত কিশোরী সময়ের কাছে,
প্রায় প্রতিদিন স্বামী স্ত্রী, উভয়ের কাছে,
এরকম স্বাধীনতা চাইনা।
গরিব ধনীর কাছে, চাষী মহাজনের কাছে, শ্রমিক মালিকের কাছে, অফিসে বসের কাছে, ভোটার নেতার কাছে,
আমরা সবাই কেন সার্বিক স্বাধীনতা পাইনা ! অতএব, এরকম স্বাধীনতা চাইনা।
তবু শান্তি পাই,
আমাদের জাতীয় পতাকা আছে।
স্বাধীনতা চোখে দেখিনি কোনদিনও,
দেখেছি তেরঙ্গা তলায় কত উন্মাদনা আর মিথ্যার আস্ফালন।
তবুও শান্তনা
দিই মনকে, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছি, এই ত্রিবর্ন রঞ্জিত জাতীয় পতাকা।
বছরে একদিন হলেও
কাঙ্খিত পতাকার কাছে সমর্পণ করি নিজেকে।
অবচেতনে মুখ থেকে বেরিয়ে আসে সারে জাঁহা ছে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা।
মৌন মনে স্বীকার করে নিই, হায় স্বাধীনতা,
তোমার ওই গেরুয়া, সাদা, সবুজ
আর ঐতিহ্যের অশোক চক্রের মান রাখতে পারিনি আমরা।আত্ম দহনে চোখ নামিয়ে মাটির দিকে তাকাই।
কত বলিদান এর এই মাটি, বড্ড হিনমন্যতায় ভূগি।
হঠাৎ বুকের ভিতর হাহাকার ওঠে,
হায় পরম পাওয়ার স্বাধীনতা, হায় !
অপরাহ্নে এসে আজ মনে হয়,
ছেলের চেতনা ফিরে এলে আমার চেতনায়,
বছরে অন্তত একবার চকোলেট নিয়ে খুশি মনে পেতাম স্বাধীনতার স্বাদ।
… …. … … … … …