Jibanananda Das Poems ~ জীবনানন্দ দাশের কবিতা

জীবনানন্দ দাশের জীবনী, এবং জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত জনপ্রিয় কবিতা গুলো নিচে দেওয়া হলো। Jibanananda Das short biography with Jibanananda Das poems are given below.

জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)
উৎস: উইকিপিডিয়া

জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ১৮৯৯খ্রিস্টাব্দে, বাংলাদেশের অন্তর্গত বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি ২২শে অক্টোবর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে, ট্রাম দুর্ঘটনায় কলকাতায় তিনি পরলোক গমন করেন।

বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি ছিলেন একাধারে আধুনিক কবি, লেখক, ঔপন্যাসিক,প্রাবন্ধিক, গল্পকার, দার্শনিক ও গীতিকার, সম্পাদক এবং অধ্যাপক।

বিশেষত জীবনানন্দের কাব্যে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ হয়ে উঠেছে বিচিত্র চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি‘ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন।

১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ‘কল্লোল‘ পত্রিকায় প্রথম জীবনানন্দ দাশ-এর আত্মপ্রকাশ ‘নীলিমা‘ কবিতার মধ্য দিয়ে।

জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম – সাতটি তারার তিমির, রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা,শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি।

তার রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘বনলতা সেন‘ র জন্য নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সন্মেলনে রবীন্দ্র-স্মৃতি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে পুরস্কার পেয়েছেন।

তার রচিত অন্যতম ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা‘ কাব্যগ্রন্থটির জন্য, ভারত সরকারের অনুমোদিত সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে লাভ করেন।

কবিতা

Title

জীবনানন্দ দাশ -এর কবিতা সমূহ (Jibanananda Das Poems)

Shara Din Trum Bus (সারা দিন ট্রাম-বাস) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) সারা দিন ট্রাম-বাস (Shara Din Trum Bus)

সারাদিন ট্রাম-বাস-ফেরিওলাদের ডাক- কুষ্ঠরোগী পথের উপর-
হাড়ভাঙা মহিষের গাড়িগুলো-বাজারের রুক্ষ শব্দ-বস্তির চিৎকার।
আমার হৃদয়ে যেই শঙ্খমালা কিশোরীটি বাঁধিতে আসিয়াছিল ঘর
তাহারে ফিরায়ে দেয় শহরের পথ থেকে পাড়াগাঁর কান্তারের পার-

কবে যে কান্তার ছেড়ে আসিয়াছি নির্বাসিত আমি রাজপুত্রের মতন,
কোথায় শিমের গন্ধ? শ্যামা পাখি? কিশোর গেল কি মরে বুকের ভেতর?
দুপুর ঘনায়ে ওঠে ভিজা মেঘে- চিল কাঁদে-কই বলো?
কই হীরামন?-
আমার হৃদয়ে যে গো শঙ্খমালা কিশোরীটি বাঁধিতে আসিয়াছিলো ঘর।

আমি যে সংসারে মন দিতে চাই, আমি যে বাঁধিতে চাই পৃথিবীর
মানুষের মতো
বাসা এক; আমি যে বন্দরে যাই, অন্নের উপায় করি-স্বামী হই
পিতা হই আমি;
আমি যে ভিড়ের গন্ধ গায়ে মাখি দিনরাত; আঁধারে ঘুমাই, দিনে
রৌদ্রে ইতস্তত
ঘুরে ফিরি; সংসারের কাজ কথা হাটের ভিতরে আমি অলক্ষ্যে যে
পড়িতেছি নামি-
এইসব ছেড়ে দিয়ে, হে হৃদয়, চলে যাও অঘ্রাণের পাড়াগাঁর ম্লান
তেপান্তরে,
সেখানে বটের বুকে দাঁড়কাক বাঁধে বাসা-রাঙা পশমের মতো
ফলগুলো ঝরে
শুকনো পাতার 'পরে; সেখানে সন্ধ্যার বক শঙ্খের মতন শাদা
পাখনা ভাসায়
কামরাঙা-রক্তমেঘে-তিনশো বছর ধরে কোন্‌ অভিমানী মঠ
দেখা যায়-
খড়কুটা মুখে নিয়ে শালিখ উড়িয়া যায় কান্তারের ঘাস থেকে
প্রান্তরের ঘাসে,
এক তারা ফুটিতেই রূপসী প্রেতিনী সেই শঙ্খমালা দেখা দেয়
মাঠের বাতাসে। …


যেদিন আমি পৃথিবীর থেকে চলে যাব- হে শঙ্খমালা-
অপরিসীম নক্ষত্র তুমি বিছিয়ে রেখো আকাশে,
আকাশের অন্ধকার সমতলতা ঘিরে যুগান্তের লুপ্ত মানবীদের মতো
কয়েকটি নির্জন নক্ষত্র-
এর চেয়ে গভীর জিনিস কী আর থাকতে পারে
কী আর থাকতে পারে শঙ্খমালা-

আর আমার বিছানা করে দিয়ো সমতল দেশের শিয়রে
সবুজ ঘাসের ছবির ভিতর
ধানসিড়ি নদীর জলের গন্ধের কাছে
এই বাংলায়।

সারা দিন ট্রাম-বাস (Shara Din Trum Bus) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Monobij (মনোবীজ) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) মনোবীজ (Monobij)

জামিরের ঘন বন অইখানে রচেছিলো কারা?
এইখানে লাগে নাই মানুষের হাত।
দিনের বেলায় যেই সমারূঢ় চিন্তার আঘাত
ইস্পাতের আশা গড়ে- সেই সব সমুজ্জ্বল বিবরণ ছাড়া

যেন আর নেই কিছু পৃথিবীতেঃ এই কথা ভেবে
যাহারা রয়েছে ঘুমে তুলীর বালিশে মাথা গুঁজে;
তাহারা মৃত্যুর পর জামিরের বনে জ্যোৎস্না পাবে নাকো খুঁজে;
বধির-ইস্পাত খড়্গ তাহাদের কোলে তুলে নেবে।
সেই মুখ এখনও দিনের আলো কোলে নিয়ে করিতেছে খেলাঃ
যেন কোনো অসংগতি নেই- সব হালভাঙা জাহাজের মতো সমন্বয়
সাগরে অনেক রৌদ্র আছে ব’লে;- পরিব্যস্ত বন্দরের মতো মনে হয়
যেন এই পৃথিবীকে;- যেখানে অঙ্কুশ নেই তাকে অবহেলা
করিবে সে আজো জানি;- দিনশেষে বাদুড়ের-মতন-সঞ্চারে
তারে আমি পাবো নাকো;- এই রাতে পেয়ারার ছায়ার ভিতরে
তারে নয়- স্নিগ্ধ সব ধানগন্ধী প্যাঁচাদের প্রেম মনে পড়ে।
মৃত্যু এক শান্ত ক্ষেত- সেইখানে পাবো নাকো তারে।

পৃথিবীর অলিগলি বেয়ে আমি কত দিন চলিলাম।
ঘুমালাম অন্ধকারে যখন বালিশেঃ
নোনা ধরে নাকো সেই দেওয়ালের
ধূসর পালিশে
চন্দ্রমল্লিকার বন দেখিলাম
রহিয়াছে জ্যোৎস্নায় মিশে।
যেই সব বালিহাঁস ম’রে গেছে পৃথিবীতে
শিকারির গুলির আঘাতেঃ
বিবর্ণ গম্বুজে এসে জড়ো হয়
আকাশের চেয়ে বড়ো রাতে;
প্রেমের খাবার নিয়ে ডাকিলাম তারে আমি
তবুও সে নামিল না হাতে।

পৃথিবীর বেদনার মতো ম্লান দাঁড়ালামঃ
হাতে মৃত সূর্যের শিখা;
প্রেমের খাবার হাতে ডাকিলাম;
অঘ্রাণের মাঠের মৃত্তিকা
হ’য়ে গেলো;
নাই জ্যোৎস্না- নাই কো মল্লিকা।

সেই সব পাখি আর ফুলঃ
পৃথিবীর সেই সব মধ্যস্থতা
আমার ও সৌন্দর্যের শরীরের সাথে
ম্যমির মতনও আজ কোনোদিকে নেই আর;
সেই সব শীর্ণ দীর্ঘ মোমবাতি ফুরায়েছে
আছে শুধু চিন্তার আভার ব্যবহার।
সন্ধ্যা না-আসিতে তাই
হৃদয় প্রবেশ করে প্যাগোডার ছায়ার ভিতরে
                             অনেক ধূসর বই নিয়ে।

চেয়ে দেখি কোনো-এক আননের গভীর উদয়ঃ
সে-আনন পৃথিবীর নয়।
দু-চোখ নিমীল তার কিসের সন্ধানে?
‘সোনা- নারী- তিশি- আর ধানে’-
বলিল সেঃ ‘কেবল মাটির জন্ম হয়।’
বলিলামঃ ‘তুমিও তো পৃথিবীর নারী,
কেমন কুৎসিত যেন,- প্যাগোডার অন্ধকার ছাড়ি
শাদা মেঘ-খরশান বাহিরে নদীর পারে দাঁড়াবে কি?’

‘শানিত নির্জন নদী’- বলিল সে- ‘তোমারি হৃদয়,
যদিও তা পৃথিবীর নাদী- ন্দী নয়ঃ
তোমারি চোখের স্বাদে ফুল আর পাতা
জাগে না কি? তোমারি পায়ের নিচে মাথা
রাখে না কি? বিশুস্ক- ধূসর-
ক্রমে-ক্রমে মৃত্তিকার কৃমিদের স্তর
যেন তারা; -অপ্সরা –উর্বশী
তোমার উৎকৃষ্ট মেঘে ছিলো না কি বসি?
ডাইনির মাংসের মতন
আজ তার জঙ্ঘা আর স্তন;
বাদুড়ের খাদ্যের মতন
একদিন হ’য়ে যাবে;
যে-সব মাছিরা কালো মাংস খায়- তারে ছিঁড়ে খাবে।’
কান্তারের পথে যেন সৌন্দর্যের ভূতের মতন
তাহারে চকিত আমি করিলাম;- রোমাঞ্চিত হ’য়ে তার মন
ব’লে গেলোঃ ‘তক্ষিত সৌন্দর্য সব পৃথিবীর
উপনীত জাহাজের মাস্তুলের সুদীর্ঘ শরীর
নিয়ে আসে একদিন, হে হৃদয়,- একদিন
দার্শনিকও হিম হয়- প্রণয়ের সম্রাজ্ঞীরা হবে না মলিন?’
কল্পনার অবিনাশ মহনীয় উদ্‌গিরণ থেকে
আসিল সে হৃদয়ের। হাতে হাত রেখে
বলিল সে। মনে হ’লো পাণ্ডুলিপি মোমের পিছনে
রয়েছে সে। একদিন সমুদ্রের কালো আলোড়নে
উপনিষদের শাদা পাতাগুলো ক্রমে ডুবে যাবে;
ল্যাম্পের আলো হাতে সেদিন দাঁড়াবে
অনেক মেধাবী মুখ স্বপ্নের বন্দরের তীরে,
যদিও পৃথিবী আজ সৌন্দর্যেরে ফেলিতেছে ছিঁড়ে।

প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে?
হয়তো জ্বালায়ে গিয়েছে অনেক- অনেক বিগত কাল,
বায়ুর ঘোড়ার খুরে যে পরায় অগ্নির মতো নাল
জানে না সে কিছু,- তবু তারে জেনে সূর্য আজিকে জ্বলে।
চীনের প্রাচীর ভেঙে যেতে-যেতে-
                                      চীনের প্রাচীর বলেঃ
অনেক নবীন সূর্য দেখেছি রাতকানা যেন নীল আকাশের তলে;
পুরোনো শিশির আচার পাকায় আলাপী জিভের তরে;
যা-কিছু নিভৃত- ধূসর- মেধাবী- তাহাদের রক্ষা করে;
পাথরের চেয়ে প্রাচীন ইচ্ছা মানুষের মনে গড়ে।
                   অথবা চীনের প্রাচীরের ভুল- চেনেনি নিজের হাল;
কিংবা জ্বালায়ে গিয়েছে হয়তী অনেক বিগত কাল;
অগ্নিঘোড়ার খুরে যে পরায় জলের মতন নাল
জানে না সে কিছু,… তবু তারে জেনে সূর্য আজিকে জ্বলে;-
ববিনে জড়ানো মিশরের ম্যমি কালো বিড়ালকে বলে।

কাব্যগ্রন্থ – মহাপৃথিবী

মনোবীজ (Monobij) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Shiiter Rater Kobita (শীতের রাতের কবিতা) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) শীতের রাতের কবিতা (Shiiter Rater Kobita)

গভীর শীতের রাত এই সব,- তবু
চারিদিকে যুবাদের হৃদয়ের জীবনের কথা
মৃত্যুর উপর দিয়ে সাঁকোর মতন
চেয়ে দেখে মরণের অপ্রমেয়তা
সেতুর ছবির মত মিলে গিয়ে জলের ভিতরে
জীবনের জয়-
আর মরণের স্তব্ধতাকে অনুভব করে।
অনুভব করে এই জীবনই মহৎ,
মরণের চেয়ে বড় জীবনের  সুর;
যদিও অন্ন আজ ভূমি নয়- তবুও মৈত্রেয়ী
অন্নলোভাতুর;
হৃদয়বিহীনভাবে- দশ বিশ শত কোটি টন
চলে আজ পঙ্গপাল,- নিজেকে উজাড় করে;- জেনে
জীবন হতাশ নয় ব’লেই জীবন।

শীতের রাতের কবিতা (Shiiter Rater Kobita) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Aaj (আজ) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) আজ (Aaj)

অন্ধ সাগরের বেগে উৎসারিত রাত্রির মতন
আলোড়ন মানুষের প্রিয়তর দিক নির্ণয়ের
পথ আজ প্রতিহত; তবুও কোথাও
নির্মল সন্ততি দেশ সময়ের নব নব তীর-
          পেতে পায়ে হয়তো বা মানব হৃদয়;

মহাপতনের দিনে আজ অবহিত হয়ে নিতে হয়।
যদিও অধীর লক্ষ্যে অন্ধকারে মানুষ চলেছে
ধ্বংস আশা বেদনায়

বন্য মরালের মত চেতনায় নীল কুয়াশায়,-
কুহেলি সরিয়ে তবু মানুষের কাহিনীর পথে
ভাস্বরতা এসে পড়ে মাঝে মাঝে-
          স্বচ্ছ ক্রান্তিবলয়ের মতন জগতে।

মনে হয় মহানিশীথের স্তন্যপায়ী
মানুষ তবুও শিশুসূর্যের সন্তান,
স্থিরতর বিষয়ী সে,-
          যদিও হৃদয়ে রক্তে আজো ভুল অকূলের গান।

কাব্যগ্রন্থ – আলোপৃথিবী

আজ (Aaj) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Mon Mormor (মনমর্মর) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) মনমর্মর (Mon Mormor)

আমার মনের ভিতরে ছায়া আলো এসে পড়ে;
যেইসব অনুভূতি ঝরে গেছে তাদের কঙ্কাল
নদীকে দিয়েছি আমি-বিকেলকে-নক্ষত্রের দাহনে বিশাল
আকাশকে; ফিরে আসে নবদিকচিহ্ন নিয়ে মর্মের ভিতরে।

সময়ের ঢের উৎস গ্রন্থ ছবি মননের পদ্ধতি সব
নিয়ে যায় হৃদয়কে যেন কোন্‌ শেষ অনুশীলনের পানে;
অন্তহীন অন্ধকার রয়ে গেছে হয়তো সেখানে:
অসীম আলোর মতো তবুও করেছি অনুভব।

মনমর্মর (Mon Mormor) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Dinratri (দিনরাত্রি) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) দিনরাত্রি (Dinratri)

সমস্ত দিন
সমস্ত পৃথিবীই যেন আকাশ।
চারদিকে রৌদ্রের ভিতর রয়ে গেছে নির্মল জলের অনুভূতি;
জল আকাশ ও আগুনের থেকে এই সব রাত্রির জন্ম হয়;
অন্তহীন শুভ্রবিবেকী নক্ষত্রের;
এই সব স্থায়ী জিনিস চল-বিশ্বলোকের;
মানব্জীবনের; এদের অনবচ্ছিন্ন উজ্জ্বল প্রবাহে ধৌত হয়ে
সমস্ত গৃহযুদ্ধের গৃহবলিভুকদের রক্তের
শেষ বিন্দুও খুঁজে পাবে না কোথাও।
কোথাও থাকবে না আন্তর্জাতিক অন্যায়ের ছায়া আর।

দেখা যাবে দিন সূর্যশরীরীঃ
যাযাবর হাঁসকে নিয়ে চলেছে মেঘের
ফেনাওড়ানো দূরতর নীলিমায়;
জেগে উঠবে বিকেলের শিয়রে
সাগরের বাতাস যেন- দূর ময়দানের;
অন্তহীন নক্ষত্রের চলা ফেরার দেশে পাওয়া যায় তাকে;
ঐ ঝাউ গাছের আঁধারের ভিতরেও;
বন্ধরে নগরে
মানুষের হিংস্র বেড়ালের গর্জনকে বিনমিত ক'রে
করুণার রাত্রিঋতুর মত
পাওয়া যায় তাকে- পাওয়া যায় তাকে।

আজকের মলিনতা রক্ত কোথায় লীন হয়ে যাচ্ছে
সময়ের মনে- নিরবচ্ছিন্ন বিস্মরণে-
দিন ও রাত্রির অন্তহীন
জলঝর্ণার শুশ্রুষার শব্দের ভিতর।

কাব্যগ্রন্থ – আলোপৃথিবী

দিনরাত্রি (Dinratri) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Noboprosthan (নবপ্রস্থান) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) নবপ্রস্থান (Noboprosthan)

শীতের কুয়াশা মাঠে; অন্ধকারে এইখানে আমি।
আগত ও অনাগত দিন যেন নক্ষত্রবিশাল শূন্যতার
এই দিক- অথবা অপর দিক; দুয়েরি প্রাণের
বিচিত্র বিষয়জ্ঞানে মিলে গেছে- তবুও প্রেমের
অমর সম্মতিক্রমে। পৃথিবীর যে কোনো মানব
দেশ কাল যে কোনো অপর দেশ সময় ও মানুষের তরে
সেবা জ্ঞান শৃঙ্খলা অবতার হয়ে সব বাধ্যব্যথাহারা
নবীন ভূগোললোকে মিশে গেছে;- দিকভ্রান্তিহীন
সারসের মত,- নীল আকাশকে ঈষৎ ক্রেংকারে
খুলে ফেলে। যা হয়েছে যা হয়নি সবই নক্ষত্রবীথির
একজন অথবা অপর জন;- নিজেদের হৃদয়যন্ত্রের
নিকটে সত্যের মত প্রতিভাত হয়ে উঠে তারা
অনন্ত অমার পটভূমির ভিতরে
অনিমেষ সময়ের মত জ্বলে;- মনে হয় আশা
অথবা নিরাশা যদি শতান্দীর জীবনকে খেয়ে শেষ করে
পবিত্রতায় তবু দিক ও সম্য মিলে একজন অমলিন তারা
অমিলের ঊর্ণা ধোঁয়া ছায়া কেটে মিলনের পথে
জ্ব'লে যায়; যায় না কি?- নিভু নিভু হয়ে শীতকালের দেয়ালে
ফুটে ওঠে; কথায় কারণে কামে অগণন ক্লেদে কনফারেন্‌সে
বাতির অভাব হ'লে পৃথিবীর মানচিত্রে অন্ধকারে পথ
দেখবার মত কোনো কাউকে না পেলে ঐ তারাবলী তারা
প্রাণের ভিতর জড় মূল্যের অধিক ব্যাপ্তি;- চারিদিকে এই
অবিচ্ছিন্ন পাতা ছায়া শিশিরের নগরের হৃদয়কম্পনে ব'সে আমি
তোমাকে জাগায়ে দিয়ে, প্রিয়, সব কালীন জননী
মানুষের এক জাতি এক দেশ এক মৃত্যু একটি জীবন এক
গহন আলোকে দেখি না কি? প্রেতের রোলের ভিতরে বাঙালীর
ঘর ভেঙে ঝ'রে গেলে জেনিভার অমেয় প্রাসাদ
ম'রে যায়;- ফ্ল্যান্ডাস, ভাডুন, ভিমি রিজ, উক্রেইন
হোংয়াহো নীপার রাইন চিনদুইনের পরে সব শব
কলকাতা হাওড়া মেদিনীপুর ডায়মনহারবারে বাংলায়,
অগণন মানবের মৃতদেহ প্রমাণিত হয়ে
কিরকম শুভ্র সৌভ্রাত্রের মত, চেয়ে দেখ, ছড়ায়ে র'য়েছে।
নতুন মৃত্যুর বীজ নয়- ওরা নতুন নেশন-
বীজ নতুন বঞ্চনা-ধ্বংস-মৃগতৃষ্ণাবীজ নয়; নব নব প্রাণনের
সংযমে পৃথিবী গ'ড়ে সফলতা পাবে মনে হয়-
মানুষের ইতিহাসভনিতার দিন শেষ ক'রে তার স্থির
প্রকৃতিস্থ আত্মার আলোর বাতায়নে।

আমার ব্যাহত ঘরে এ ছাড়া অপর কোনো বাতি
নেই আর, আমার হৃদয়ে নেই, এইখানে মৃত পোল্যান্ডের
সীমানা রাইনের রোলে মিশে গিয়ে মরণকর্কশ জামের্নির
হৃদয়ের পরে হিমধূমোজ্জ্বল অলিভ-বনের
আন্দোলনে এম্পিডোক্লেসের স্মৃতি বরাবর জয় ক'রে নিয়ে
নবীন লক্ষ্যের গ্রীস্‌, নতুন প্রাণের চীন আফ্রিক্‌ ভারত প্যালেস্টাইন।
পৃথিবীর ভয়াবহ রাষ্ট্রকূট অন্ধকারে অন্তহীন বিদ্যুৎ-বৃষ্টির
জ্যোর্তিময় ব্রেজিল পাথরে আমি নবীন ভূগোল
এরকম মানবীয় হয়ে যেতে দেখি;- ইতিহাস
মানবিক হয়ে ওঠে;- যাযাবর শ্রীজ্ঞানের মত
এখন অকুতোভয় উদাত্ত আবেগে
সঞ্চারিত হয়ে যাওয়া অর্বাচীন জেনে নিয়ে তবু
নতুন প্রাণের নব উদ্দেশের অভিসারী হতে
চায় নাকি- চায় না কি জনসাধারণ পৃথিবীর?
দেয়ালে ট্রামের পথে নর্দমায় ট্রাকের বিঘোর হনিতের
অস্ফুট সিংহের শব্দে সবিস্ময় উত্তরচরিত্রে
ক্রমেই উজ্জ্বল হয়ে যেতে পারে বাংলার লোকশ্রুত বিবর্ণ চরিত।
আমার চোখের পথে আবর্তিত পৃথিবীর আঁকাবাঁকা রেখে
যতদূর চ'লে গেছেঃ কলকাতা নতুন দিল্লী ইয়াঙ্কী আফ্রিক্‌
দান্তের ইটালী শেক্‌স্‌পীরিয় ইংল্যান্ড মেঘ-পাতাল মর্ত্যের গল্পের
বিভিন্ন পর্বের থেকে উঠে এসে রবীন্দ্র লেনিন মার্কস ফ্রয়েড রোলাঁর
আলোকিত হ'য়ে ওঠে; মুমুক্ষার অবতার বুদ্ধের চেয়েও
সমুৎসুক চোখ মেলে আপামর মানবীয় ঋণ-

রিরাংসা-অন্যায়-মৃত্যু-আঁধারে উজ্জ্বল
পথিকৃত সাঁকোর মতন সব শতকের ভগ্নাংশকে শেষ
ক’রে দিয়ে পবিত্র সময়পথে মিশে গেছে;- সব অতীতের
মথিত বিষের মত শুদ্ধ হয়ে সহজ কঠিন দক্ষিণ-ভবিষ্যতে
মিলে গিয়ে মানবের হৃদয়ের গভীর অশোক
ধ্বনিময়তার মত তুমি হে জোবন, আজ রাতে অন্ধকারে আনন্দসূর্যের
আলোড়নে আলোকিত ব’লেই তো মানব চ’লেছে।।

কাব্যগ্রন্থ – আলোপৃথিবী

নবপ্রস্থান (Noboprosthan) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Footpathey (ফুটপাথে) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ফুটপাথে (Footpathey)

অনেক রাত হয়েছে- অনেক গভীর রাত হয়েছে;
কলকাতার ফুটপাথ থেকে ফুটপাথে- ফুটপাথ থেকে ফুটপাথে-
কয়েকটি আদিম সর্পিণী সহোদরার মতো
                                      এই-যে ট্র্যামের লাইন ছড়িয়ে আছে
পায়ের তলে, সমস্ত শরীরের রক্তে এদের বিষাক্ত বিস্বাদ স্পর্শ
                                                অনুভব ক’রে হাঁটছি আমি।
গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে, কেমন যেন ঠাণ্ডা বাতাস;
কোন দূর সবুজ ঘাসের দেশ নদী জোনাকির কথা মনে পড়ে আমার,-
তারা কোথায়?
তারা কি হারিয়ে গেছে?
পায়ের তলে লিকলিকে ট্র্যামের লাইন,- মাথার ওপরে
                                                অসংখ্য জটিল তারের জাল
শাসন করছে আমাকে।
এই ঠাণ্ডা বাতাসের মুখে এই কলকাতা শহরে এই গভীর রাতে
          কোনো নীল শিরার বাসাকে কাঁপতে দেখবে না তুমি;
জলপাইয়ের পল্লবে ঘুম ভেঙে গেলো ব’লে কোনো ঘুঘু তার
          কোমল নীলাভ ভাঙা ঘুমের আস্বাদ তোমাকে জানাতে আসবে না।
হলুদ পেঁপের পাতাকে একটা আচমকা পাখি ব’লে ভুল হবে না তোমার,
সৃষ্টিকে গহন কুয়াশা ব’লে বুঝতে পেরে চোখ নিবিড় হ’য়ে
                                                উঠবে না তোমার!
প্যাঁচা তার ধূসর পাখা আমলকীর ডালে ঘষবে না এখানে,
আমলকীর শাখা থেকে নীল শিশির ঝ’রে পড়বে না,
তার সুর নক্ষত্রকে লঘু জোনাকির মতো খশিয়ে আনবে না এখানে,
রাত্রিকে নীলাভতম ক’রে তুলবে না!
সবুজ ঘাসের ভিতর অসংখ্য দেয়ালি পোকা ম’রে রয়েছে
                                      দেখতে পাবে না তুমি এখানে
পৃথিবীকে মৃত সবুজ সুন্দর কোমল একটি দেয়ালি পোকার মতো
                                                মনে হবে না তোমার,
জীবনকে মৃত সবুজ সুন্দর শীতল একটি দেয়ালি পোকার মতো
                                                          মনে হবে না;
প্যাঁচার সুর নক্ষত্রকে লঘু জোনাকির মতো খশিয়ে আনবে না এখানে,
শিশিরের সুর নক্ষত্রকে লঘু জোনাকির মতো খশিয়ে আনবে না,
সৃষ্টিকে গহন কুয়াশা ব’লে বুঝতে পেরে চোখ
নিবিড় হ’য়ে উঠবে না তোমার।

কাব্যগ্রন্থ – মহাপৃথিবী

ফুটপাথে (Footpathey) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Aadim (আদিম) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) আদিম (Aadim)

প্রথম মানুষ কবে
এসেছিল এই সবুজ মাঠের ফসলের উৎসবে!
দেহ তাহাদের এই শস্যের মতো উঠেছিল। ফলে,
এই পৃথিবীর ক্ষেতের কিনারে, সবজির কোলে কোলে
এসেছিল তারা ভোরের বেলায় রৌদ্র পোহাবে ব’লে—
এসেছিল তারা পথ ধরে এই জলের গানের রবে!
এই পৃথিবীর ভাষা
ভালোবেসেছিল, ভালো লেগেছিল এ মাটির ভালোবাসা!
ভালো লেগেছিল এ বুকের ক্ষুধা, শস্যের মতো সাধ!
এই আলো আর ধুলোর পিপাসা, এই শিশিরের স্বাদ
ভালো লেগেছিল—বুকে তাহাদের জেগেছিল আহ্লাদ!
প্রথম মানুষ—চোখে তাহাদের প্রথম ভোরের আশা!
এসেছিল সন্তান—
দেহে তাঁহাদের নীল সাগরের ঢেউয়ের ফেনার ঘ্রাণ!
শঙ্খের মতো কানে তাহাদের সিন্ধু উঠিত গেয়ে।
শস্যের মতো তারা ওই নীল আকাশের পানে চেয়ে
গেয়ে গেছে গান! ধানের গন্ধে পৃথিবীর ক্ষেত ছেয়ে
আলোয় ছায়ায় ফসলের মতো করিয়া গিয়াছে স্নান!
সে কোন প্রথম ভোরে
প্রথম মানুষ আসিল প্রথম মানুষীর হাত ধরে!
ভালো লেগেছিল এ দেহের ক্ষুধা, শস্যের মতো সাধ!
এই আলো আর ধুলোর পিপাসা, এই শিশিরের স্বাদ
ভালো লেগেছিল–বুকে তাহাদের জেগেছিল আহ্লাদ!
নীল আকাশের প্রথম রৌদ্র ক্ষেতে পড়েছিল ঝরে!

আদিম (Aadim) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Pakhi (পাখি) ~ জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das)

কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) পাখি (Pakhi)

ঘুমায়ে রয়েছ তুমি ক্লান্ত হ'য়ে, তাই
আজ এই জ্যোৎস্নায় কাহারে জানাই
আমার এ-বিস্ময়- বিস্ময়ের ঠাঁই,
নক্ষত্রের থেকে এলো;- তুমি জেগে নাই,

আমার বুকের 'পরে এই এক পাখি;
পাখি? না ফড়িং কীট? পাখি না জোনাকি?
বাদামি সোনালী নীল রোম তার রোমে-রোমে রেখেছে সে ঢাকি,
এমন শীতের রাতে এসেছে একাকী

নিস্তব্ধ ঘাসের থেকে কোন্‌
ধানের ছড়ার থেকে কোথায় কখন,
রেশমের ডিম থেকে এই শিহরণ!
পেয়েছে সে এই শিহরণ!

জ্যোৎস্নায়- শীতে
কাহারে সে চাহিয়াছে? কতোদূরে চেয়েছে উড়িতে?
মাঠের নির্জন খড় তারে ব্যথা দিতে
এসেছিলো? কোথায় বেদনা নাই এই পৃথিবীতে।

না- না- তার মুখে স্বপ্ন সাহসের ভর
ব্যথা সে তো জানে নাই- বিচিত্র এ-জীবনের 'পর
করেছে নির্ভর;
রোম- ঠোঁট- পালকের এই মুগ্ধ আড়ম্বর।

জ্যোৎস্নায়- শীতে
আমার কঠিন হাতে তবু তারে হলো যে আসিতে,
যেই মৃত্যু দিকে-দিকে অবিরল- তোমারে তা দিতে
কেন দ্বিধা? অদৃশ্য কঠিন হাতে আমিও বসেছি পাখি,
আমারেও মুষড়ে ফেলিতে
দ্বিধা কেহ করিবে না; জানি আমি, ভুল ক'রে দেবে নাকো ছেড়েঃ
তবু আহা, তারের শিশিরে ভেজা এ রঙিন তূলোর বলেরে
কোমল আঙুল দিয়ে দেখি আমি চুপে নেড়ে-চেড়ে,
সোনালি উজ্জ্বল চোখে কোন্‌ এক ভয় যেন ঘেরে

তবু তার; এই পাখি- এতটুকু- তবু সব শিখেছে সে- এ এক বিস্ময়
সৃষ্টির কীটেরও বুকে এই ব্যথা ভয়;
আশা নয়- সাধ নয়- প্রেম স্বপ্ন নয়
চারিদিকে বিচ্ছেদের ঘ্রাণ লেগে রয়

পৃথিবীতে; এই ক্লেশ ইহাদেরো বুকের ভিতর;
ইহাদেরো; অজস্র গভীর রঙ পালকের 'পর
তবে কেন? কেন এ সোনালি চোখ খুঁজেছিলো জ্যোৎস্নার সাগর?
আবার খুঁজিতে গেল কেন দূর সৃষ্টি চরাচর।

পাখি (Pakhi) কবিতাটি ছাড়াও কবি জীবনানন্দ দাশ (Jibanananda Das) -এর অন্যান্য কবিতা পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।