Rabindranath Tagore Poems ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী, এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত জনপ্রিয় কবিতা গুলো নিচে দেওয়া হলো। Rabindranath Tagore short biography with Rabindranath Tagore poems are given below.

rabindranath-tagore
উৎস: উইকিপিডিয়া

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৭ই মে, ১৮৬১ সালে, (১২৬৮ বঙ্গাব্দে, ২৫শে বৈশাখ), কলকাতার এক জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতায় ৭ই আগস্ট, ১৯৪১ সালে, (১৩৪৮ বঙ্গাব্দে, ২২শে শ্রাবণ), পৈত্রিক বাসভবনেই তিনি পরলোক গমন করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ছদ্মনাম ছিল ভানুসিংহ ঠাকুর (ভণিতা)।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একাধারে জনপ্রিয় বাঙালি কবি,ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার,প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বলে মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে বাংলা সাহিত্যে কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়।

বিস্তারিত ...
আট বছর বয়স থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা তাঁর ‘অভিলাষ‘ কবিতাটি প্রকাশিত হয়।

কবির-এর লেখা উল্লেখযোগ্য বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।

১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথ-এর সং অফারিংস (Song Offerings) কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এতে গীতাঞ্জলি ও সমসাময়িক আরও কিছু কিছু কাব্যগ্রন্থের কবিতা রবীন্দ্রনাথ নিজে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।

কবির যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২টি খন্ড রবীন্দ্ররচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি খন্ড “কবিতা ও গান”, “নাটক ও প্রহসন”, “গল্প ও উপন্যাস” এবং “প্রবন্ধ” বিভাগে বিন্যস্ত।

তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস-এর নাম “গোরা” এবং “ঘরে বাইরে” ইত্যাদি।

কবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ-কীর্তি হল সংগীত। তার রচিত- জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে, এবং আমার সোনার বাংলা এই বাংলা গান দুটি ভারতবাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে পরিগণিত হয়।

আজও আমরা ২৫শে বৈশাখ দিনটিকে বিশ্বকবির জন্ম দিবস হিসাবে পালন করি।

কবিতা

Title

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর কবিতা সমূহ (Rabindranath Tagore Poems)

Yotokal Tui Sisur Moto (যতকাল তুই শিশুর মতো) ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) যতকাল তুই শিশুর মতো (Yotokal Tui Sisur Moto)

যতকাল তুই শিশুর মতো
             রইবি বলহীন,
অন্তরেরি অন্তঃপুরে
             থাক্‌ রে ততদিন।
                           অল্প ঘায়ে পড়বি ঘুরে,
                           অল্প দাহে মরবি পুড়ে,
                           অল্প গায়ে লাগলে ধুলা
                                  করবে যে মলিন–
                           অন্তরেরি অন্তঃপুরে
                                  থাক্‌ রে ততদিন।

যখন তোমার শক্তি হবে
       উঠবে ভরে প্রাণ
আগুন-ভরা সুধা তাঁহার
       করবি যখন পান–
             বাইরে তখন যাস রে ছুটে,
             থাকবি শুচি ধুলায় লুটে,
             সকল বাঁধন অঙ্গে নিয়ে
                    বেড়াবি স্বাধীন–
             অন্তরেরি অন্তঃপুরে
                    থাক্‌ রে ততদিন।

১৪ শ্রাবণ, ১৩১৭

যতকাল তুই শিশুর মতো (Yotokal Tui Sisur Moto) কবিতাটি ছাড়াও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

অপমানিত (Opomanito) ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)

হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।
মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে,
সম্মুখে দাঁড়িয়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান,
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।।

মানুষের পরশেরে প্রতিদিন ঠেকাইয়া দূরে
ঘৃণা করিয়াছ তুমি মানুষের প্রাণের ঠাকুরে।
বিধাতার রুদ্ররোষে দুর্ভিক্ষের দ্বারে বসে
ভাগ করে খেতে হবে সকলের সাথে অন্নপান।
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।।

তোমার আসন হতে যেথায় তাদের দিলে ঠেলে
সেথায় শক্তিরে তব নির্বাসন দিলে অবহেলা।
চরণে দলিত হয়ে ধুলায় সে যায় বয়ে–
সেই নিম্নে নেমে এসো, নহিলে নাহি রে পরিত্রাণ।
অপমানে হতে হবে আজি তোরে সবার সমান।।

যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নিচে,
পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।
অজ্ঞানের অন্ধকারে আড়ালে ঢাকিছ যারে
তোমার মঙ্গল ঢাকি গড়িছে সে ঘোর ব্যবধান।
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।।

শতেক শতাব্দী ধরে নামে শিরে অসম্মানভার,
মানুষের নারায়ণে তবুও কর না নমস্কার।
তবু নত করি আঁখি দেখিবারে পাও না কি
নেমেছে ধুলার তলে হীনপতিতের ভগবান।
অপমানে হতে হবে সেথা তোরে সবার সমান।।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর অন্যান্য কবিতা পেতে হলে এখানে ক্লিক করুন

Rajar Mato Bese Tumi (রাজার মতো বেশে তুমি) ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) রাজার মতো বেশে তুমি (Rajar Mato Bese Tumi)

রাজার মতো বেশে তুমি সাজাও যে শিশুরে
             পরাও যারে মণিরতন-হার–
খেলাধুলা আনন্দ তার সকলি যায় ঘুরে,
             বসন-ভুষণ হয় যে বিষম ভার।
                   ছেঁড়ে পাছে আঘাত লাগি,
                   পাছে ধুলায় হয় সে দাগি,
আপনাকে তাই সরিয়ে রাখে সবার হতে দূরে,
             চলতে গেলে ভাবনা ধরে তার–
রাজার মতো বেশে তুমি সাজাও যে শিশুরে,
             পরাও যারে মণিরতন-হার।

কী হবে মা অমনতরো রাজার মতো সাজে,
            কী হবে ওই মণিরতন-হারে।
দুয়ার খুলে দাও যদি তো ছুটি পথের মাঝে
           রৌদ্রবায়ু-ধুলাকাদার পাড়ে।
                  যেথায় বিশ্বজনের মেলা
                  সমস্ত দিন নানান খেলা,
চারি দিকে বিরাট গাথা বাজে হাজার সুরে,
          সেথায় সে যে পায় না অধিকার,
রাজার মতো বেশে তুমি সাজাও যে শিশুরে,
          পরাও যারে মণিরতন-হার।

( বোলপুর, ২ শ্রাবণ, ১৩১৭)

রাজার মতো বেশে তুমি (Rajar Mato Bese Tumi) কবিতাটি ছাড়াও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Tomar Doya Jodi Chahite Nao Jani (তোমার দয়া যদি চাহিতে নাও জানি) ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) তোমার দয়া যদি চাহিতে নাও জানি (Tomar Doya Jodi Chahite Nao Jani)

তোমার দয়া যদি
চাহিতে নাও জানি
তবুও দয়া করে
চরণে নিয়ো টানি।
আমি যা গড়ে তুলে
আরামে থাকি ভুলে
সুখের উপাসনা
করি গো ফলে ফুলে–
সে ধুলা-খেলাঘরে
রেখো না ঘৃণাভরে,
জাগায়ো দয়া করে
বহ্নি-শেল হানি।

সত্য মুদে আছে
দ্বিধার মাঝখানে,
তাহারে তুমি ছাড়া
ফুটাতে কে বা জানে।
মৃত্যু ভেদ করি’
অমৃত পড়ে ঝরি’,
অতল দীনতার
শূন্য উঠে ভরি’
পতন-ব্যথা মাঝে
চেতনা আসি বাজে,
বিরোধ কোলাহলে
গভীর তব বাণী।

২২ শ্রাবণ, ১৩১৭
(গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ)

তোমার দয়া যদি চাহিতে নাও জানি (Tomar Doya Jodi Chahite Nao Jani) কবিতাটি ছাড়াও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।