কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ভ্রম (Bhrome)।
ভ্রম
— শক্তি চট্টোপাধ্যায়
আসলে তুমি ক্ষুদ্র ছোট,
ফুলের মত বাগানে ফোটো,
বিরহে যদি দাঁড়িয়ে ওঠো
ভূতের মত দেখায়,
আসলে কেউ বড় হয়না,
বড়র মত দেখায় |
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ভ্রম (Bhrome)।
ভ্রম
— শক্তি চট্টোপাধ্যায়
আসলে তুমি ক্ষুদ্র ছোট,
ফুলের মত বাগানে ফোটো,
বিরহে যদি দাঁড়িয়ে ওঠো
ভূতের মত দেখায়,
আসলে কেউ বড় হয়না,
বড়র মত দেখায় |
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) যখন একাকী আমি একা (Jokhon Ekaki Ami Eka)।
এখন সন্ন্যাসী দুইজন–
একজন আমি আর অন্যজন আমার পিতার
মমতাবিহীন চক্ষু
মাঝেমধ্যে রাত্রে দেন দেখা
যখন একাকী আমি একা
মাঝেমধ্যে রাত্রে দেন দেখা
কেন তাঁর নামত সন্ন্যাস
কেন তিনি মাত্র মায়াহীন
মনে ভাবি
এমন দেখিনি তাঁকে আগে
কোনদিন
এখন সন্ন্যাসী দুইজন–
একজন আমি আর অন্যজন আমার পিতার
মমতাবিহীন চক্ষু
মাঝেমধ্যে রাত্রে দেন দেখা
যখন একাকী আমি একা।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) এবার হয়েছে সন্ধ্যা (Ebar Hoyechhe Shondhya)।
এবার হয়েছে সন্ধ্যা। সারাদিন ভেঙেছো পাথর
পাহাড়ের কোলে
আষাঢ়ের বৃষ্টি শেষ হয়ে গেলো শালের জঙ্গলে
তোমারও তো শ্রান্ত হলো মুঠি
অন্যায় হবে না – নাও ছুটি
বিদেশেই চলো
যে কথা বলনি আগে, এ-বছর সেই কথা বলো।
শ্রাবনের মেঘ কি মন্থর!
তোমার সর্বাঙ্গ জুড়ে জ্বর
ছলোছলো
যে কথা বলনি আগে, এ-বছর সেই কথা বলো।
এবার হয়েছে সন্ধ্যা, দিনের ব্যস্ততা গেছে চুকে
নির্বাক মাথাটি পাতি, এলায়ে পড়িব তব বুকে
কিশলয়, সবুজ পারুল
পৃথিবীতে ঘটনার ভুল
চিরদিন হবে
এবার সন্ধ্যায় তাকে শুদ্ধ করে নেওয়া কি সম্ভবে?
তুমি ভালোবেসেছিলে সব
বিরহে বিখ্যাত অনুভব
তিলপরিমাণ
স্মৃতির গুঞ্জন – নাকি গান
আমার সর্বাঙ্গ করে ভর?
সারাদিন ভেঙ্গেছো পাথর
পাহাড়ের কোলে
আষাঢ়ের বৃষ্টি শেষ হয়ে গেলো শালের জঙ্গলে
তবু নও ব্যথায় রাতুল
আমার সর্বাংশে হলো ভুল
একে একে শ্রান্তিতে পড়েছি নুয়ে। সকলে বিদ্রূপভরে দ্যাখে।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) বাগানে তার ফুল ফুটেছে (Bagane Taar Phul Futechhe)।
ওইখানে ওই বাগানে তার ফুল ফুটেছে কতো
জানতে পারি, ওর মধ্যে কি একটি দেবার মতো?
একটি কিম্বা দুটির ইচ্ছে আসতে আমার কাছে
তাহার পদলেহন করতে সমস্ত ফুল আছে।
সব ফুলই কি গোষ্ঠীগত, সব ফুলই কি চাঁদের
একটি দুটি আমায় চিনুক, বাদবাকি সব তাঁদের
গাছ তো তাঁহার বাগানভর্তি, আমার রোপণ ছায়া–
প্রবীণ তাঁদের ভালোবাসা, আমার বাসতে চাওয়াই।।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) একবার তুমি (Ekbar Tumi)।
একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা কর–
দেখবে, নদির ভিতরে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে পড়ছে
পাথর পাথর পাথর আর নদী-সমুদ্রের জল
নীল পাথর লাল হচ্ছে, লাল পাথর নীল
একবার তুমি ভাল বাসতে চেষ্টা কর ।
বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল–ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
সমস্ত পায়ে-হাঁটা পথই যখন পিচ্ছিল, তখন ওই পাথরের পাল একের পর এক বিছিয়ে
যেন কবিতার নগ্ন ব্যবহার, যেন ঢেউ, যেন কুমোরটুলির সলমা-চুমকি-জরি-মাখা প্রতিমা
বহুদূর হেমন্তের পাঁশুটেনক্ষত্রের দরোজা পর্যন্ত দেখে আসতে পারি ।
বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল
চিঠি-পত্রের বাক্স বলতে তো কিছু নেই–পাথরের ফাঁক-ফোকরে রেখে এলেই কাজ হাসিল–
অনেক সময় তো ঘর গড়তেও মন চায় ।
মাছের বুকের পাথর ক্রমেই আমাদের বুকে এসে জায়গা করে নিচ্ছে
আমাদের সবই দরকার । আমরা ঘরবাড়ি গড়বো–সভ্যতার একটা স্থায়ী স্তম্ভ তুলে ধরবো ।
রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে-ঝরাতে চলে গেলে
একবার তুমি ভালবাসতে চেষ্টা করো ।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) অবনী বাড়ি আছো (Aboni Ari Achho)।
অবনী বাড়ি আছো
অবনী বাড়ি আছো
দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া
কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া
‘অবনী বাড়ি আছো?’
বৃষ্টি পড়ে এখানে বারোমাস
এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে
পরাঙ্মুখ সবুজ নালিঘাস
দুয়ার চেপে ধরে–
‘অবনী বাড়ি আছো?’
আধেকলীন হৃদয়ে দূরগামী
ব্যথার মাঝে ঘুমিয় পড়ি আমি
সহসা শুনি রাতের কড়ানাড়া
‘অবনী বাড়ি আছ?’
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ভাত নেই, পাথর রয়েছে (Bhat Nei Pathor Royechhe)।
বছর-বিয়োনী মেঘ বৃষ্টি দেয়, বজ্রপাত দেয়–
ডোবা’র রহস্য বাড়ে, পদ্মপাতা দীঘিতে তছনছ।
শিকড়, কেঁচোর মত, জীবনের অনুগ্রহ পায়,
পায় না মাথায় ছাতা, এত হাতা ভাতের মানুষও!
মানুষ বারুদ খুবই ভালোবাসে, ধূপগন্ধ যেন
আকাশপিদ্দিম গেঁথে মন্ত্রী যায় সানাই বাজাতে,
পুলিস-মেথর যায় ঝাঁটা হাতে জানাতে বিদায়–
দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই, লাগে ভালো।
সমস্যার সমাধান পায় ভূয়োদর্শী রাজবাড়ি–
অত্যন্ত সহজে, শুধু মানুষ পাথর নয় ব’লে
পরিত্রাণ পেয়ে যায়। অথচ পাথরে যদি মারো,
ঘা দাও, অমনি বগা ফোঁস করে, ঐতিহ্যমন্ডিত
দেশের পাথর যদি ছেদ্রে যায়, বিদেশ কী কবে!
ছাত নেই, ভাত নেই – কোন্ কাম পাথরে, মচ্ছবে–
তোমাদের?
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) প্রতিকৃতি (Protikriti)।
শুয়ো না কখনো দিনে মৃত ঝরা বাতিটার পাশে।
ও কার চোখের জল ও কার মুখের মতো ম্লান;
প্রতিকূল হাওয়া এসে দাঁড়ালেই শুরু বালি খসা
খুঁজি সে সোনালি চুল চুল চুল তখনো আকাশে।
পাই না; ঘুরায়ে তালু মুছে দেবো চোখের আভাস
হে বিষণ্ণ মর্মরের ফোঁটা যেন নীরবে সাজানো
দেবতা, সুদূর স্মৃতি; প্রতিমা কি প্রচ্ছায়া তোমার।
পুরানো ধূলায় খুঁজি, ধূলা হতে পুরানো হৃদয়ে।
কখন ঢেকেছি মুখ আপনার দুঃখ মুছে নিতে
বেদনা, অপর কষ্ট; এবং উজ্জ্বল বাতায়নে
প্রকৃতির সম্ভাবন, স্থিতি, সুখ উত্তাল মৌসুমী…
আতিশয্য দেখে চোখ অকারণ গলে গেছে কিনা
জানি না; সে-স্বপ্নে রাতে অবশ্য তন্দ্রায় গাঢ় প্রেম
তোমার মুখের 'পরে, বুকে, নাতিশীতল হৃদয়ে
আমারি চোখের অশ্রু, অকস্মাৎ স্খলিত বিন্যাস…
দুঃখের মুকুর তুমি অন্ধকারে আমার সান্ত্বনা॥
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ওদিকে যেও না তুমি আর (Odike Jeyo Na Tumi Aar)।
বেজে ওঠে দূর টেলিফোনে
কাঁটাতার
ওদিকে যেও না তুমি আর
ওদিকে যেও না তুমি আর।
আছো তুমি ভালো!
দুইটি বিড়াল শাদা-কালো
আছে দুই হাতে
কথা হবে তোমাতে-আমাতে।
সে-কথা কি আজো মনে পড়ে?
বেজে ওঠে দূর টেলিফোনে
কাঁটাতার
ওদিকে যেও না তুমি আর
ওদিকে যেও না তুমি আর।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় (Shakti Chattopadhyay) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) আমি যাই (Ami Jai)।
যেখানেই থাকো
এপথে আসতেই হবে
ছাড়ান্ নেই
সম্বল বলতে সেই
দিন কয়েকের গল্প
অল্প অল্পই
আমি যাই
তোমরা পরে এসো
ঘড়ি-ঘন্টা মিলিয়ে
শাক-সবজি বিলিয়ে
তোমরা এসো