Sukanta Bhattacharya Kobita ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা

সুকান্ত ভট্টাচার্য জীবনী, এবং সুকান্ত ভট্টাচার্য বিখ্যাত কবিতা (Sukanta Bhattacharya Kobita) সমূহ গুলো নিচে দেওয়া হলো। All the selected poems of sukanta bhattacharya in bengali are listed below.

সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)
উৎস: উইকিপিডিয়া

সুকান্ত ভট্টাচার্য ১৫ আগস্ট ১৯২৬ সালে কলিকাতার কালীঘাটের ৪৩, মহিম হালদার স্ট্রীটের মাতামহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি প্রথম ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে, ১৯৪৭ সালে ১৩ই মে মাত্র ২১ বছর বয়সে কলকাতার ১১৯ লাউডট স্ট্রীটের রেড এড কিওর হোমে মৃত্যুবরণ করেন।

সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যে প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি এবং মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী।

তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ-এর নাম – ছাড়পত্র(১৯৪৭), পূর্বাভাস(১৯৫০), ঘুম নেই(১৯৫০) ইত্যাদি।

কবিতা

Title

সুকান্ত ভট্টাচার্য -এর কবিতা সমূহ (Sukanta Bhattacharya Kobita)

Blak Market (ব্ল্যাক-মার্কেট) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ব্ল্যাক-মার্কেট (Blak Market)

হাত করে মহাজন, হাত করে জোতদার,
ব্ল্যাক-মার্কেট করে ধনী রাম পোদ্দার,
গরীব চাষীকে মেরে হাতখানা পাকালো
বালিগঞ্জেতে বাড়ি খান ছয় হাঁকালো।
কেউ নেই ত্রিভুবনে, নেই কিছু অভাবও
তবু ছাড়ল না তার লোক-মারা স্বভাবও।
একা থাকে, তাই হরি চাকরটা রক্ষী
ত্রিসীমানা মাড়ায় না তাই কাক-পক্ষী।
বিশ্বে কাউকে রাম কাছে পেতে চান না,
হরিই বাজার করে, সে-ই করে রান্না।
এমনি ক’রেই বেশ কেটে যাচ্ছিল কাল,
হঠাৎ হিসেবে রাম দেখলেন গোলমাল,
বললেন চাকরকেঃ কিরে ব্যাটা, কি ব্যাপার?
এত টাকা লাগে কেন বাজারেতে রোজকার?
আলু তিন টাকা সের? পটল পনেরো আনা?
ভেবেছিস বাজারের কিছু বুঝি নেই জানা?
রোজ রোজ চুরি তোর? হতভাগা, বজ্জাত!
হাসছিস? এক্ষুণি ভেঙে দেব সব দাঁত।
খানিকটা চুপ করে বলল চাকর হরিঃ
আপনারই দেখাদেখি ব্ল্যাক-মাকের্ট করি।

  (মিঠে কড়া কাব্যগ্রন্থ)

ব্ল্যাক-মার্কেট (Blak Market) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Prostut (প্রস্তুত) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) প্রস্তুত (Prostut)

কালো মৃত্যুরা ডেকেছে আজকে স্বয়ম্বরায়,
নানাদিকে নানা হাতছানি দেখি বিপুল ধরায়।
ভীত মন খোঁজে সহজ পন্থা, নিষ্ঠুর চোখ;
তাই বিষাক্ত আস্বাদময় এ মর্তলোক,
কেবলি এখানে মনের দ্বন্দ্ব আগুন ছড়ায়।

অবশেষে ভুল ভেঙেছে, জোয়ার মনের কোণে,
তীব্র ভ্রূকুটি হেনেছি কুটিল ফুলের বনে;
আভিশাপময় যে সব আত্মা আজো অধীর,
তাদের সকাশে রেখেছি প্রাণের দৃঢ় শিবির;
নিজেকে মুক্ত করেছি আত্মসমর্পণে।

চাঁদের স্বপ্নে ধুয়ে গেছে মন যে-সব দিনে,
তাদের আজকে শত্রু বলেই নিয়েছি চিনে,
হীন র্স্পধারা ধূর্তের মতো শক্তিশেলে
ছিনিয়ে আমায় নিতে পারে আজো সুযোগ পেলে
তাই সতর্ক হয়েছি মনকে রাখি নি ঋণে।

অসংখ্য দিন কেটেছে প্রাণের বৃথা রোদনে
নরম সোফায় বিপ্লবী মন উদ্ধোধনে;
আজকে কিন্তু জনতা-জোয়ারে দোলে প্লাবন,
নিরন্ন মনে রক্তিম পথ অনুধাবন,
করছে পৃথিবী পূর্ব-পন্থা সংশোধনে।

অস্ত্র ধরেছি এখন সমুখে শত্রু চাই,
মহামরণের নিষ্ঠুর ব্রত নিয়েছি তাই;
পৃথিবী জটিল, জটিল মনের সম্ভাষণ
তাদের প্রভাবে রাখিনি মনেতে কোনো আসন,
ভুল হবে জানি তাদের আজকে মনে করাই।।

প্রস্তুত (Prostut) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Roudrer Gaan (রৌদ্রের গান) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) রৌদ্রের গান (Roudrer Gaan)

এখানে সূর্য ছড়ায় অকৃপণ
দুহাতে তীব্র সোনার মতন মদ,
যে সোনার মদ পান ক'রে ধন ক্ষেত
দিকে দিকে তার গড়ে তোলে জনপদ।

ভারতী! তোমার লাবণ্য দেহ ঢাকে
রৌদ্র তোমায় পরায় সোনার হার,
সূর্য তোমার শুকায় সবুজ চুল
প্রেয়সী, তোমার কত না অহংকার।

সারাটা বছর সূর্য এখানে বাঁধা
রোদে ঝলসায় মৌন পাহাড় কোনো,
অবাধ রোদ্রে তীব্র দহন ভরা
রৌদ্রে জ্বলুক তোমার আমার মনও।

বিদেশকে আজ ডাকো রৌদ্রের ভোজে
মুঠো মুঠো দাও কোষাগার-ভরা সোনা,
প্রান্তর বন ঝলমল করে রোদে,
কী মধুর আহা রৌদ্রে প্রহর গোনা !
রৌদ্রে কঠিন ইস্পাত উজ্জ্বল
ঝকমক করে ইশারা যে তার বুকে
শূন্য নীরব মাঠে রৌদ্রের প্রজা
স্তব করে জানি সূর্যের সম্মুখে।

পথিক-বিরল রাজপথে সূর্যের
প্রতিনিধি হাঁকে আসন্ন কলরব,
মধ্যাহ্নের কঠোর ধ্যানের শেষে
জানি আছে এক নির্ভয় উৎসব।

তাইতো এখানে সূর্য তাড়ায় রাত
প্রেয়সী, তুমি কি মেঘভয়ে আজ ভীত?
কৌতুকছলে এ মেঘ দেখায় ভয়,
এ ক্ষণিক মেঘ কেটে যাবে নিশ্চিত।

সূর্য, তোমায় আজকে এখানে ডাকি-
দুর্বল মন, দুর্বলতর কায়া,
আমি যে পুরনো অচল দীঘির জল
আমার এ বুকে জাগাও প্রতিচ্ছায়া।।

রৌদ্রের গান (Roudrer Gaan) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Chattagram: 1943 (চট্টগ্রামঃ ১৯৪৩) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) চট্টগ্রামঃ ১৯৪৩ (Chattagram: 1943)

ক্ষুদার্ত বাতাসে শুনি এখানে নিভৃত এক নাম-
চট্টগ্রামঃ বীর চট্টগ্রাম!
বিক্ষত বিধ্বস্ত দেহে অদ্ভুত নিঃশব্দ সহিষ্ণুতা
আমাদের স্নায়ুতে স্নায়ুতে
বিদ্যুৎপ্রবাহ আনে, আনে আজ চেতনার দিন।
চট্টগ্রামঃ বীর চট্টগ্রাম!
এখনো নিস্তব্ধ তুমি
তাই আজো পাশবিকতার
দুঃসহ মহড়া চলে,
তাই আজো শত্রুরা সাহসী।
জানি আমি তোমার হৃদয়ে
অজস্র ঔদার্য আছে; জানি আছে সুস্থ শালীনতা
জানি তুমি আঘাতে আঘাতে
এখনও স্তিমিত নও, জানি তুমি এখনো উদ্দাম-
হে চট্টগ্রাম!
তাই আজো মনে পড়ে রক্তাক্ত তোমাকে
সহস্র কাজের ফাঁকে মনে পড়ে শার্দূলের ঘুম
অরণ্যের স্বপ্ন চোখে, দাঁতে নখে প্রতিজ্ঞা কঠোর।
হে অভুক্ত ক্ষুদিত শ্বাপদ-
তোমার উদ্যত থাবা, সংঘবদ্ধ প্রতিটি নখর
এখনো হয় নি নিরাপদ।
দিগন্তে দিগন্তে তাই ধ্বনিত গর্জন
তুমি চাও শোণিতের স্বাদ-
যে স্বাদ জেনেছে স্তালিনগ্রাদ।
তোমার সংকল্পস্রোতে ভেসে যাবে লোহার গরাদ
এ তোমার নিশ্চিত বিশ্বাস।
তোমার প্রতিজ্ঞা তাই আমার প্রতিজ্ঞা, চট্টগ্রাম!
আমার হৃৎপিণ্ডে আজ তারি লাল স্বাক্ষর দিলাম।।

চট্টগ্রামঃ ১৯৪৩ (Chattagram: 1943) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Debdaru Gache Roder Jholok (দেবদারু গাছে রোদের ঝলক) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) দেবদারু গাছে রোদের ঝলক (Debdaru Gache Roder Jholok)

দেবদারু গাছে রোদের ঝলক, হেমন্তে ঝরে পাতা,
সারাদিন ধ’রে মুরগীরা ডাকে, এই নিয়ে দিন গাঁথা৷
রক্তের ঝড় বাইরে বইছে, ছোটে হিংসার ঢেউ,
খবরে কাগজ জানায় সেকথা, চোখে দেখি নাকো কেউ॥

১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রচিত এই কবিতাটি খুলনার ‘সপ্তর্ষি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়৷ শয্যাশায়ী সুকান্ত ‘রেড-এড কিওর হোম’ হাসপাতালের রাইটিং প্যাডে এটি লিখে পাঠান৷ কবিতাটি মনীশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে প্রাপ্ত৷

দেবদারু গাছে রোদের ঝলক (Debdaru Gache Roder Jholok) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Mrito Prithibi (মৃত পৃথিবী) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) মৃত পৃথিবী (Mrito Prithibi)

পৃথিবী কি আজ শেষে নিঃস্ব
ক্ষুধাতুর কাঁদে সারা বিশ্ব,
চারিদিকে ঝরে পড়া রক্ত,
জীবন আজকে উত্যক্ত।
আজকের দিন নয় কাব্যের
পরিণাম আর সম্ভাব্যের
ভয় নিয়ে দিন কাটে নিত্য,
জীবনে গোপন-দুর্বৃত্ত।
তাইতো জীবন আজ রিক্ত,
অলস হৃদয় স্বেদসিক্ত;
আজকে প্রাচীর গড়া ভিন্ন
পৃথিবী ছড়াবে ক্ষতচিহ্ন।
অগোচরে নামে হিম-শৈত্য,
কোথায় পালাবে মরু দৈত্য?
জীবন যদিও উৎক্ষিপ্ত,
তবু তো হৃদয় উদ্দীপ্ত,
বোধহয় আগামী কোনো বন্যায়,
ভেসে যাবে অনশন, অন্যায়।।

   (পূর্বাভাস কাব্যগ্রন্থ)

মৃত পৃথিবী (Mrito Prithibi) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Amar Mrityur Por (আমার মৃত্যুর পর) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) আমার মৃত্যুর পর (Amar Mrityur Por)

আমার মৃত্যুর পর থেমে যাবে কথার গুঞ্জন,
বুকের স্পন্দনটুকু মূর্ত হবে ঝিল্লীর ঝংকারে
জীবনের পথপ্রান্তে ভুলে যাব মৃত্যুর শঙ্কারে,
উজ্জ্বল আলোর চোখে আঁকা হবে আঁধার-অঞ্জন।
পরিচয়ভারে ন্যুব্জ অনেকের শোকগ্রস্ত মন,
বিস্ময়ের জাগরণে ছদ্মবেশ নেবে বিলাপের
মুহূর্তে বিস্মৃত হবে সব চিহ্ন আমার পাপের।
কিছুকাল সন্তর্পণে ব্যক্ত হবে সবার স্মরণ।

আমার মৃত্যুর পর, জীবনের যত অনাদর
লাঞ্ছনার বেদনায়, ষ্পৃষ্ট হবে প্রত্যেক অন্তর।।

   (পূর্বাভাস কাব্যগ্রন্থ)

আমার মৃত্যুর পর (Amar Mrityur Por) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Mejdake Muktir Ovinondon (মেজদাকে : মুক্তির অভিনন্দন) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) মেজদাকে : মুক্তির অভিনন্দন (Mejdake Muktir Ovinondon)

তোমাকে দেখেছি আমি অবিচল, দৃপ্ত দুঃসময়ে
ললাটে পড়ে নি রেখা ক্রূরতম সংকটেরও ভয়ে;
তোমাকে দেখেছি আমি বিপদেও পরিহাস রত
দেখেছি তোমার মধ্যে কোনো এক শক্তি সুসংহত৷
দুঃখ শোকে, বারবার অদৃষ্টের নিষ্ঠুর আঘাতে
অনাহত, আত্মমগ্ন সমুদ্যত জয়ধ্বজা হাতে৷
শিল্প ও সাহিত্যরসে পরিপুষ্ট তোমার হৃদয়
জীবনকে জানো তাই মান নাকো কোনো পরাজয়;
দাক্ষিণ্যে সমৃদ্ধ মন যেন ব্যস্ত ভাগীরথী জল
পথের দু’ধারে তার ছড়ায় যে দানের ফসল,
পরোয়া রাখে না প্রতিদানের তা এমনি উদার,
বহুবার মুখোমুখি হয়েছে সে বিশ্বাসহন্তার৷
তবুও অক্ষুণ্ণ মন, যতো হোক নিন্দা ও অখ্যাতি
সহিষ্ণু হৃদয় জানে সর্বদা মানুষের জ্ঞাতি,
তাইতো তোমার মুখে শুনে বাণপ্রস্থের ইঙ্গিত
মনেতে বিস্ময় মানি, শেষে হবে বিরক্তির জিত?
পৃথিবীকে চেয়ে দেখ, প্রশ্ন ও সংশয়ে থরো থরো,
তোমার মুক্তির সঙ্গে বিশ্বের মুক্তিকে যোগ করো॥

১৯৪৪ সালে সুকান্তর মেজদা রাখাল ভট্টাচার্য গ্রেপ্তার হন৷ তাঁর মুক্তি উপলক্ষে সুকান্ত এই কবিতাটি লেখেন৷

মেজদাকে : মুক্তির অভিনন্দন (Mejdake Muktir Ovinondon) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Chil (চিল) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) চিল (Chil)

পথ চলতে চলতে হঠাৎ দেখলামঃ
ফুটপাতে এক মরা চিল!

চমকে উঠলাম ওর করুণ বীভৎস মূর্তি দেখে।
অনেক উঁচু থেকে যে এই পৃথিবীটাকে দেখেছে
লুণ্ঠনের অবাধ উপনিবেশ;
যার শ্যেন দৃষ্টিতে কেবল ছিল
তীব্র লোভ আর ছোঁ মারার দস্যু প্রবৃত্তি-
তাকে দেখলাম, ফুটপাতে মুখ গুঁজে প’ড়ে।
গম্বুজশিখরে বাস করত এই চিল,
নিজেকে জাহির করত সুতীক্ষ্ণ চীৎকারে;
হালকা হাওয়ায় ডানা মেলে দিত আকাশের নীলে-
অনেককে ছাড়িয়েঃ এককঃ
পৃথিবী থেকে অনেক, অনেক উঁচুতে।

অনেকে আজ নিরাপদ;
নিরাপদ ইঁদুর ছানারা আর খাদ্য-হাতে ত্রস্ত পথচারী,
নিরাপদ- কারণ আজ সে মৃত।
আজ আর কেউ নেই ছোঁ মারার,
ওরই ফেলে-দেওয়া উচ্ছিষ্টের মতো
ও পড়ে রইল ফুটপাতে,
শুক্‌নো, শীতল, বিকৃত দেহে।

হাতে যাদের ছিল প্রাণধারণের খাদ্য
বুকের কাছে সযত্নে চেপে ধরা
তারা আজ এগিয়ে গেল নির্ভয়ে;
নিষ্ঠুর বিদ্রূপের মতো পিছনে ফেলে
আকাশচ্যুত এক উদ্ধত চিলকে।।

কাব্যগ্রন্থঃ- ছাড়পত্র

চিল (Chil) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Osojhow Din (অসহ্য দিন) ~ সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) অসহ্য দিন (Osojhow Din)

অসহ্য দিন! স্নায়ু উদ্বেল। শ্লথ পায়ে ঘুরি ইতস্তত
অনেক দুঃখে রক্ত আমার অসংযত।
মাঝে মাঝে যেন জ্বালা করে এক বিরাট ক্ষত
হৃদয়গত।
ব্যর্থতা বুকে, অক্ষম দেহ, বহু অভিযোগ আমার ঘাড়ে
দিন রাত শুধু চেতনা আমাকে নির্দয় হাতে চাবুক মারে।
এখানে ওখানে, পথে চলতেও বিপদকে দেখি সমুদ্যত,
মনে হয় যেন জীবনধারণ বুঝি খানিকটা অসঙ্গত।।

অসহ্য দিন (Osojhow Din) কবিতাটি ছাড়াও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (Sukanta Bhattacharya)-এর অন্যান্য কবিতা,গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।