তোমায় দেখেছিলাম কোন এক শ্রাবণের সকালে
যখন আমি বসেছিলাম জানলার পাশে
আমার চোখ ছিল পুকুরে ফুটে ওঠা এক পদ্ম ফুলের দিকে যার উপর দুটো ফড়িং উড়ছিল
আমার জানলার সামনেই রাস্তা তার পাশেই পুকুর।
বৃষ্টির ঝরঝর শব্দের মধ্যেই তোমার নূপুরের শব্দ শুনে তোমার দিকে তাকালাম
বৃষ্টিতে খালি মাথায় হেঁটে যাচ্ছিলে।
শুধু একবারই যা দেখেছিলাম তোমার মুখ
তোমার পরনের কালো শাড়ি ভিজে জবজবে হয়ে গেছিল
যেন কালো মেঘ পূর্ণিমার চাঁদকে অর্ধেকটা ঢেকে দিয়েছে
তোমার মুখ থেকে বৃষ্টির জলের ফোঁটা মহানন্দে পড়ছিল
যেন ওরা খুব সুখী
ওরা মেঘ থেকে মুক্তি পেয়ে যতটা শান্তি পেয়েছিল তোমার মুখের স্পর্শ পেয়ে তার চেয়ে অধিক শান্তি পেয়েছে
ব্যস্ শুধু এতটুকুই দেখলাম।
তবু তোমায় এক ঝলকে দেখে কী করে যে এত কিছুর প্রতি নজর গেল বুঝতেই পারলাম না।
তুমি চলে যেতেই আমি রাস্তায় বেরোলাম
তোমার সেই হেঁটে যাওয়ার জায়গাটাতে গিয়ে আমি দাঁড়ালাম
দেখলাম পড়ে আছে একটি ছোট্ট হীরে
সেটা হাতে তুলে আমি সেই মুহূর্তে
তোমার পিছু নেওয়ার চেষ্টা করলাম
উদ্দেশ্য ছিল হীরেটা তোমায় ফেরত দেব
আমার ধারণা হীরেটা তোমার নূপুরেই ছিল
কারণ আমি পাই নি দেখতে তোমার কানে কোনো দুল বা গলায় কোনো হার বা হাতে কোনো আংটি।
কিন্তু তোমাকে আর দেখতে পেলাম না।
এরপর কেটে গেল কত বছর
কত শ্রাবণ এলো গেল
কত গ্রীষ্ম এলো গেল
কত শীত এলো গেল
তবু আর কোনোদিনও আমার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে তোমায় যেতে দেখলাম না।
একশ কোটি বছর হয়ে গেল
তোমার ওই হীরের টুকরোটা আমার কাছে আজও আছে।
এখন ওটা নিয়েই আমি আকাশে থাকি
রাতের আকাশে ওর জন্যই মিটিমিটি করি
তবু আজও তোমায় দেখতে পেলাম না
একশ কোটি বছর হয়ে গেল তোমায় দেখতে পেলাম না।
— অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী