একদমে- বোকা মেয়ের দুর্গতি ! : হিয়া রাজা
-

শেয়ার করুন

এ মেয়েটা দুর বোকা তুই কেন খামোখা কবিতার মায়ায় জড়ালি, বেকার অমর্ত্য আশা বেকসুর ভালোবাসা ধুলোয় ছড়ালি !

কলসির কানা মারা পরিশুদ্ধ জগাই মাধাই ত্যাগ করে দুম করে হতচ্ছাড়া কবিয়ালটার গলদেশে পিতপিতে পাঁচটাকা রজনীর মালাটা পরালি !

মাথায় কবিতা ভরা, ঘর জোড়া আধা ন্যাড়া ফুটপাত ঝোলভাত হরিবোল ছেলে, মাঠে ঘাটে, পতাকা উঁচিয়ে হাঁটে, গাঁজা সম্বল,

ফেয়ারনেস ক্রীম মাখ, জুয়েলারি দোকানেতে মাসে মাসে টাকা রাখিবৌভাতে পাড়াজুড়ে কেমন নেমত্তন্ন হতো, বুকজ্বালা, টোকো অম্বল !

শুনলি না ঝুলে গেলি, তবুও যদি দেখতাম এক খানা কত সিসি বাইক ফাটিয়ে, তোল তোল তোলা তোল, গোল গোল সুডৌল লবেঞ্চুস নিয়ে,

ম্যান মেশিন, মোক্ষ দিতো এপাড়া ওপাড়া ঘুরে, সোনা চেনে খোলাবুকে, লোকমুখে বাপ রে, কি দাপট রে, ইঁট বালি স্টোনচিপস দিয়ে !

সুন্দরী কন্যার বাপ, হলে হতো  খাপে খাপ, হতো জগাই মাধাই কত কামাইয়ে জামাই, পথে দেখলেই যেন অতিভক্তি চোরের লক্ষণ !

এ বয়সে বিয়াল্লিশ জিন্স পরে, ঝকঝকে ব্রেসলেটে গোবদা রাশভারী হাত নাড়ে, এবেলা ওবেলা দেখ দিবা রাত্রি পেটচুক্তি, অতিরিক্ত উপরি ভক্ষণ !

দাদা দিদি ওঠে বসে, ঘাড় নাড়ে চলেফেরে যেন জলজ্যান্ত পয়সাকান্ত সবজান্তা কর্পোরেশনের বড়ব্যাটা

শুনলি না, তবু গেলি, ঝুলোঝুলি, প্রেমে পড়ে তবু শুলি, পেটফুলি, গাঁজাখোর কবিয়াল ব্যাটা, পদ্য লেখেরাম ঢ্যাঁটা

তবু হতো , রাস্তায় ছাগল গরু, অতি সরু লিকপিকে ঠ্যাঙ্গে দেখা হলে, মিহি তোষামোদি ঝোলে নমস্কার দাদ্দা, নমস্কার কাক্কু, মেরুদন্ড খুইয়ে বুকে হাঁটে কেঁচো  যত !

তা না তো কেন যে গেলি, বেলাবেলি, রথ দেখা কলাবেচা দুই পায়ে ঠেলি, দেখ দেখি কি যে পেলি চোখ বড় কবিয়াল, অকাজের ঢেঁকি, আকাঠ মর্কটের মতো !

মেয়েছিলাম চেয়ে, তোর দিকে, কোন দিবাস্বপ্ন সুখে, ভাগাড়ের পচা মাংসে বিক্কিরি মেয়ের মাস থাকলো বা, বিরিয়ানি খাওয়া তবু চাই !

দিবাস্বপ্নে, সব আপনেশুনশান বাজারের আলুচপের দোকানে, চোখবোজা চালু গমগমে ঢপের কেত্তনে, দিলি বাড়া ভাতে, থুড়ি থুড়ি,  পোলাওতে ছাই !

 

কিছুই তেমন করে বুঝলি না, শুঝলি না, ফাঁকতালে ঝুলে গেলি হঠাৎ বসন্তে মশগুল, চপে চুল, গলির মুখেতে লাজে হতভম্ব, বিনা সেহনাইএ বুকে বাজে লালে লাল কৃষ্ণচূড়া !

অভাবের রোদ্দুরে ব্যথার বস্তা কাঁধে দূরে, ঘুরে ঘুরে, হাসি মুখে ভাব চুরি করে, নিজের দুঃখের কথা, বেচেও বেচেনা হতচ্ছাড়া কবি মুখচোরা !

তাও যদি কবি হবে, নামগানে নাম হবে, যশ হবে, নোট খস খস হবে পোষা কাকাতুয়া হয়ে দাঁড়ে বসে নিশ্চিতে লাল লঙ্কা খাবে !

আর কবে, নাম হবে, রাতারাতি, বইমেলা মাতামাতি, বোকা বাক্সে হাতাহাতি, এদিকে ওদিকে ফ্যান, কবিতা বেশ কয় ইঞ্চি হয়ে দু পায়ের ফাঁকে ঝুলে রবে !

তা না দেখি শুকনো ধোঁয়াটে ভাঙা লাল সে রোযাকে, ছেঁড়া ফাটা, গামছা নাকি স্বপ্ন রংচটা, ঝোলে, বোম ভোলে, ধোঁয়া হয়ে উড়ে যায় আকাদেমি, নষ্ট পাঁচালি !

ঠিক হতো, দ্যাখ দেখি, বাঙালি আঁতেল ভবে, ঠিক মতো ঝোপ বুঝে কোপ দিলে কর্মহীন বুদ্ধিজীবী সবে মিলে দানা খেত, খালি তুইই না খেয়ে আঁচালি !

 

নষ্ট কবি, গল্প সবই সারা হলো পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল, গোপাল গোপালী কিন্তু সুবোধ বালক বালিকা, এই সব ঠোনা মেরে কথা দিলে কথা শোনে,

গুরুজনে হ্যাটা দিলে, সকাল সকাল সকলে কবেকার গুনধর ঝুল পড়া  ডিসি  ফ্যানে  সবসুদ্ধ ঝুলে গেলে, কপোরেশনের মড়া টানা গাড়ির চালক টাকা গোনে।

শোনো কাকা, ডেকে বলে পৌরপিতা, আমার এলাকা, তড়িৎ চুল্লিতে সুইসাইডে একটা পুড়লে একটা ফ্রি, পাঁচাঙ্গুলে নবগ্রহ লটকে আচ্ছাসে মাঞ্জা কষা পরিশুদ্ধ জগাইমাধাই পৌরপিতা

শুধু আজি হইতে নিয়ম হৈল, বিকিনি পড়িতে পারে, কিন্তু পড়িবে না অঞ্চলে কোনো সুন্দর মেয়ে, প্রেমে কিংবা প্রেমের কবিতা। 


শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন