ঠাকুমা বলতেন (Thakuma Bolten)
- নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (Nirendranath Chakraborty)

শেয়ার করুন

আজকের কবিতাটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী -এর লেখা একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা ঠাকুমা বলতেন 

ঠাকুমা বলতেন, ” দাদা, খুব বেশি তো আর

বাঁচব না, এখন তাই সাধ্যমতো আলগা দিয়ে থাকি। 

যে অল্প সময় আছে বাকি, 

দেখতে -দেখতে কেটে যাবে, তোমরা থাকো ভাল। 

আমি দেখি কী করে আমার

আঁচলের গিঁটগুলোকে ধীরেসুস্থে খুলে ফেলা যায়।”

( যখনই বলতেন, বড় নম্র একটি আলো

ভেসে উঠত শান্ত দুটি অনচ্ছ চক্ষুর জানালায় ) 

দিদি তো তক্ষুনি রেগে টং

বলত, “তুমি যাবে কোথা? দিচ্ছে বা কে যেতে? 

আমরা চাইছি গল্প শুনতে, আমরা চাইছি খেতে। 

নাড়ু, বড়ি, আম- কাসুন্দি খেয়ে দিব্যি আছি, 

বুঝলে তো ঠাকুমা? তুমি বাজে কথা বাদ দিয়ে বরং গল্প বলো,

কিংবা সেই বিখ্যাত লাউয়ের- ঘন্টা রাঁধো

মুগডাল ছড়িয়ে, আমরা চাট্টি খেয়ে বাঁচি। 

মোট কথা গিঁটগুলি  তুমি শক্ত করে বাঁধো।”

ঠাকুমা বলতেন, ” দিদি, যে -লোকটা সব-কিছু ছেড়ে একা চলে গেছে,

তার কথা যে বড্ড মনে পড়ে। 

সে -ও তো বলত, কলকাতা- শহরে

চিত্তসুন্দরীর থেকে সুন্দরী যদি-বা থাকে, তার

অর্ধেক সুন্দর রান্না কোথাও পাবে না।… যার দেখা স্বপ্নে রোজ পাচ্ছি,

দিদি, তাকে ছেড়ে আর কি থাকা যায় ?”

( বলতে বলতে হাসি ফুটে উঠত ঠাকুমার

মুখে,আলো ভাসত দুটি অনচ্ছ চক্ষুর জানালায়।) 

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ঠাকুমা বলতেন বাংলা কবিতাটি ছাড়াও অন্যান্য কবিতা পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন। 


শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন