Michael Madhusudan Dutt Poems~ মাইকেল মধুসূদন দত্তর কবিতা

Krisnochura (কৃষ্ণচূড়া) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) কৃষ্ণচূড়া (Krisnochura)

(১)

     এই যে কুসুম শিরোপরে, পরেছি যতনে,
     মম শ্যাম-চূড়া-রূপ ধরে এ ফুল রতনে!
বসুধা নিজ কুন্তলে                 পরেছিল কুতূহলে
                    এ উজ্জ্বল মণি,
রাগে তারে গালি দিয়া,  লয়েছি আমি কাড়িয়া—
     মোর কৃষ্ণ-চূড়া কেনে পরিবে ধরণী?

(২)

     এই যে কম মুকুতাফল, এ ফুলের দলে,—
     হে সখি, এ মোর আঁখিজল, শিশিরের ছলে!
লয়ে কৃষ্ণচূড়ামণি,            কাঁদিনু আমি, স্বজনি,
                    বসি একাকিনী,
তিতিনু নয়ন-জলে;                সেই জল এই দলে
     গলে পড়ে শোভিতেছে, দেখ্ লো কামিনি!

(৩)

     পাইয়া এ কুসুম রতন—শোন্ লো যুবতি,
     প্রাণহরি করিনু স্মরণ —স্বপনে যেমতি!
দেখিনু রূপের রাশি                মধুর অধরে বাঁশী,
                    কদমের তলে,
পীত ধড়া স্বর্ণরেখা,         নিকষে যেন লো লেখা,
     কুঞ্জশোভা বরগুঞ্জমালা দোলে গলে!

(৪)

     মাধবের রূপের মাধুরী, অতুল ভুবনে—
     কার মনঃ নাহি করে চুরি, কহ লো ললনে?
যে ধন রাধায় দিয়া,              রাধার মনঃ কিনিয়া
                    লয়েছিলা হরি,
সে ধন কি শ্যামরায়,          কেড়ে নিলা পুনরায়?
     মধু কহে, তাও কভু হয় কি, সুন্দরি?

(ব্রজাঙ্গনা কাব্য)

কৃষ্ণচূড়া (Krisnochura) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Prithibi (পৃথিবী) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) পৃথিবী (Prithibi)

নির্ম্মি গোলাকারে তোমা আরোপিলা যবে
বিশ্ব-মাঝে স্রষ্টা ধরা! অতি হৃষ্ট মনে
চারি দিকে তারা-চয় সুমধুর রবে
( বাজায়ে সুবর্ণ বীণা ) গাইল গগনে,
কুল-বালা-দল যবে বিবাহ-উৎসবে
হুলাহুলি দেয় মিলি বধূ-দরশনে।
আইলেন আদি প্রভা হেম-ঘনাসনে,
ভাসি ধীরে শূন্যরূপ সুনীল অর্ণবে,
দেখিতে তোমার মুখ। বসন্ত আপনি
আবরিলা শ্যাম বাসে বর কলেবরে;
আঁচলে বসায়ে নব ফুলরূপ মণি,
নব ফুল-রূপ মণি কবরী উপরে।
দেবীর আদেশে তুমি,লো নব রমণি,
কটিতে মেঘলা-রূপে পরিলা সাগরে।

পৃথিবী (Prithibi) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Udyane Pushkorini (উদ্যানে পুষ্করিণী) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) উদ্যানে পুষ্করিণী (Udyane Pushkorini)

বড় রম্য স্থলে বাস তোর, লো সরসি!
দগধা বসুধা যবে চৌদিকে প্রখরে
তপনের, পত্রময়ী শাখা ছত্র ধরে
শীতলিতে দেহ তোর ; মৃদু শ্বাসে পশি,
সুগন্ধ পাখার রূপে, বায়ু বায়ু করে।
বাড়াতে বিরাম তোর আদরে, রূপসি,
শত শত পাতা মিলি মিষ্টে মরমরে;
স্বর্ণ-কান্তি ফুল ফুটি, তোর তটে বসি,
যোগায় সৌরভ-ভোগ, কিঙ্করী যেমতি
পাট-মহিষীর খাটে, শয়ন-সদনে।
নিশায় বাসর রঙ্গ তোর, রসবতি,
লয়ে চাঁদে,—কত হাসি প্রেম-আলিঙ্গনে!
বৈতালিক-পদে তোর পিক-কুল-পাত;
ভ্রমর গায়ক ; নাচে খঞ্জন, ললনে ।

উদ্যানে পুষ্করিণী (Udyane Pushkorini) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Moyuri (ময়ূরী) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) ময়ূরী (Moyuri)

             তরুশাখা উপরে, শিখিনি,
       কেনে লো বসিয়া তুই বিরস বদনে?
না হেরিয়া শ্যামচাঁদে,      তোরও কি পরাণ কাঁদে,
            তুইও কি দুঃখিনী!
      আহা!কে না ভালবাসে রাধিকারমণে?
      কার না জুড়ায় আঁখি শশী, বিহঙ্গিনি?

             আয়,পাখি,আমরা দুজনে
      গলা ধরাধরি করি ভাবি লো নীরবে;
নবীন নীরদে প্রাণ;               তুই করেছিস্ দান—
            সে কি তোর হবে?
     আর কি পাইবে রাধা রাধিকারঞ্জনে?
     তুই ভাব্ ঘনে ধনি,আমি শ্ৰীমাধবে!

              কি শোভা ধরয়ে জলধর,
       গভীর গরজি যবে উড়ে সে গগনে!
স্বর্ণবর্ণ শক্র-ধনু—                 রতনে খচিত তনু—
           চূড়া শিরোপর;
      বিজলী কনক দাম পরিয়া যতনে,
      মুকুলিত লতা যথা পরে তরুবর!

            কিন্তু ভেবে দেখ্ লো কামিনি,
     মম শ্যাম-রূপ অনুপম ত্রিভুবনে!
হায়,ও রূপ-মাধুরী,                কার মন নাহি চুরি,
           করে,রে শিখিনি!
    যার অাঁখি দেখিয়াছে রাধিকামোহনে,
    সেই জানে কেনে রাধা কুলকলঙ্কিনী!

             তরুশাখা উপরে, শিখিনি,
      কেনে লো বসিয়া তুই বিরসবদনে?
না হেরিয়া শ্যামচাঁদে,         তোর কি পরাণ কাঁদে
            তুই কি দুঃখিনী?
     আহা!কে না ভালবাসে শ্রীমধুসূদনে?
     মধু কহে, যা কহিলে,সত্য বিনোদিনি!

(ব্রজাঙ্গনা কাব্য)

ময়ূরী (Moyuri) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Duhshason (দুঃশাসন) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) দুঃশাসন (Duhshason)

মেঘ-রূপ চাপ ছাড়ি, বজ্রাগ্নি যেমনে
পড়ে পাহাড়ের শৃঙ্গে ভীষণ নির্ঘোষে ;
হেরি ক্ষেত্রে ক্ষত্র-গ্লানি দুষ্ট দুঃশাসনে,
রৌদ্ররূপী ভীমসেন ধাইলা সরোষে ;
পদাঘাতে বসুমতী কাঁপিলা সঘনে ;
বাজিল ঊরুতে অসি গুরু অসি-কোষে
যথা সিংহ সিংহনাদে ধরি মৃগে বনে
কামড়ে প্রগাঢ়ে ঘাড় লহু-ধারা শোষে ;
বিদরি হৃদয় তার ভৈরব-আরবে,
পান করি রক্ত-স্রোতঃ গৰ্জ্জিলা পাবনি ।
“মানাগ্নি নিবানু আমি আজি এ আহবে
বর্ব্বর!–পাঞ্চালী সতী, পাণ্ডব-রমণী,
তার কেশপাশ পর্শি, আকর্ষিলি যবে,
কুরু-কুলে রাজলক্ষ্মী ত্যজিলা তখনি।"

দুঃশাসন (Duhshason) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Goda O Soda (গদা ও সদা) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) গদা ও সদা (Goda O Soda)

গদা সদা নামে
         কোন এক গ্রামে
             ছিল দুই জন।
দূর দেশে যাইতে হইল;
             দুজনে চলিল।
ভয়ানক পথ—পাশে পশু ফণী বন,
ভল্লুক শার্দ্দূল তাহে গর্জ্জে অনুক্ষণ।
             কালসর্প যেমতি বিবরে,
             তস্কর লুকায়ে থাকে গিরির গহ্বরে;
                   পথিকের অর্থ অপহরে,
                   কখন বা প্রাণনাশ করে।
কহে সদা গদারে আহ্বানি
কর কিরা পর্শি মোর পাণি
                   ধৰ্ম্মে সাক্ষী মানি,
          আজি হতে আমরা দুজন
          হ’নু একপ্রাণ একমন,—
সিন্ধু উপসুন্দ যথা—জান সে কাহিনী।
আমার মঙ্গল যাহে,
তোমার মঙ্গল তাহে,
কবচে ভেদিলে বাণ, বক্ষ ক্ষত যথা,
অমঙ্গলে অমঙ্গল উভয়ের তথা।
        কহে গদা ধর্ম্ম সাক্ষী করি,
        কিরা মোর তব কর ধরি,
একাত্মা আমরা দোঁহে কি বাঁচি কি মরি।
এইরূপে মৈত্র অালাপনে
মনানন্দে চলিলা দুজনে।
সতর্ক রক্ষকরূপে সদা গদা যেন
বন পাশে একদৃষ্টে চাহে অনুক্ষণ,
পাছে পশু সহসা করয়ে আক্রমণ।
গদা চারি দিকে চায়,
এরূপে উভয়ে যায়;
       দেখে গদা সম্মুখে চাহিয়া
       থল্যে এক পথেতে পড়িয়া।
দৌড়ে মূঢ় থল্যে তুলি
হেরে কুতূহলে খুলি
      পূর্ণ থল্যে সুবর্ণমুদ্রায়,
      তোলা ভার, এত ভারি তায়।
কহে গদা সহাস বদনে
করেছিনু যাত্রা আজি আতি শুভক্ষণে
                   আমরা দুজনে।
‘দুজনে?’ কহিল সদা রাগে,
‘লোভে কি করিস্‌ তুই এ অর্থের ভাগে?
মোর পূর্ব্ব পুণ্যফলে
ভাগ্যদেবী এই ছলে
মোরে অর্থ দিলা।
                 পাপী তুই, অংশ তোরে
                 কেন দিব, ক’ তা মোরে
                        এ কি বাললীলা?
রবির করের রাশি পরশি রতনে
বরাঙ্গের অাভা তার বাড়ায় যতনে;
               কিন্তু পড়ি মাটির উপরে
              সে কর কি কোন ফল ধরে?
              সৎ যে তাহার শোভা ধনে,
              অসৎ নিতান্ত তুই, জনম কুক্ষণে।
এই কয়ে সদানন্দ থল্যে তুলে লয়ে
চলিতে লাগিলা সুখে অগ্রসর হয়ে।
বিস্ময়ে অবাক্‌ গদা চলিল পশ্চাতে,—
বামন কি কভু পায় চারু চাঁদে হাতে?
             এই ভাবি অতি ধীরে ধীরে
             গেল গদা তিতি অশ্রুনীরে।
দুই পাশে শৈলকুল ভীষণ-দর্শন,
শৃঙ্গ যেন পরশে গগন।
গিরিশিরে বরষায় প্রবলা যেমতি
             ভীমা স্রোতস্বতী,
পথিক দুজনে হেরি তস্করের দল
নাবি নীচে করি কোলাহল
            উভে আক্রমিল।
            সদা অতি কাতরে কহিল,—
শুন ভাই, পঞ্চালে যেমতি,
           বিষ্ণু রথিপতি,
জিনি লক্ষ রাজে শূর কৃষ্ণায় লভিলা,
                  মার চোরে করি রণ-লীলা।
                 হিসাবে করিয়া আঁটাআঁটি,
                 এই ধন নিও পরে বাঁটি
                 তস্করদলের মাথা কাটি।
কহে গদা, পাপী অামি, তুমি সৎজন,
ধর্ম্মবলে নিজধন করহ রক্ষণ।
                তস্কর-কুল-ঈশ্বরে
                কহিল সে যোড় করে,
           অধিপতি ওই জন ভাই,
সঙ্গী মাত্র অামি ওর, ধর্ম্মের দোহাই।
সঙ্গী মাত্র যদি তুই, যা চলি বর্ব্বর,
নতুবা ফেলিব কাটি, কহিল তস্কর।
ফাঁদে বাঁধা পাখী যথা পাইলে মুকতি,
উড়ি যায় বায়ুপথে অতি দ্রুতগতি,
                 গদা পলাইল।
সদানন্দ নিরানন্দে বিপদে পড়িল।
অালোক থাকিতে তুচ্ছ কর তুমি যারে,
বঁধু কি তোমার কভু হয় সে আঁধারে?
এই উপদেশ কবি দিলা এ প্রকারে।

গদা ও সদা (Goda O Soda) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Kurukshetre (কুরুক্ষেত্রে) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) কুরুক্ষেত্রে (Kurukshetre)

যথা দাবানল বেড়ে অনল-প্রাচীরে
সিংহ-বৎসে । সপ্ত রথী বেড়িলা তেমতি
কুমারে । অনল-কণা-রূপে শর, শিরে
পড়ে পুঞ্জে পুঞ্জে পুড়ি, অনিবার-গতি!
সে কাল অনল-তেজে, সে বনে যেমতি
রোষে, ভয়ে সিংহ-শিশু গরজে অস্থিরে,
গরজিলা মহাবাহু চারি দিকে ফিরে
রোষে, ভয়ে। ধরি ঘন ধূমের মূরতি,
উড়িল চৌদিকে ধুলা, পদ-আস্ফালনে
অশ্বের । নিশ্বাস ছাড়ি আর্জ্জুনি বিষাদে,
ছাড়িলা জীবন-আশা তরুণ যৌবনে।
আঁধারি চৌদিক যথা রাহু গ্রাসে চাঁদে
গ্রাসিলা বীরেশে যম । অস্তের শয়নে
নিদ্রা গেলা অভিমন্যু অন্যায় বিবাদে।

কুরুক্ষেত্রে (Kurukshetre) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Jolodhor (জলধর) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) জলধর (Jolodhor)

       চেয়ে দেখ,প্রিয়সখি,কি শোভা গগনে!
সুগন্ধ-বহ-বাহন,                  সৌদামিনী সহ ঘন
       ভ্ৰমিতেছে মন্দগতি প্রেমানন্দ মনে!
ইন্দ্র-চাপ রূপ ধরি,             মেঘরাজ ধ্বজোপরি,
       শোভিতেছে কামকেতু—খচিত রতনে!

       লাজে বুঝি গ্রহরাজ মুদিছে নয়ন!
মদন উৎসবে এবে,            মাতি ঘনপতি সেবে
       রতিপতি সহ রতি ভুবনমোহন!
চপলা চঞ্চলা হয়ে,            হাসি প্রাণনাথে লয়ে
       তুষিছে তাহায় দিয়ে ঘন আলিঙ্গন!

       নাচিছে শিখিনী সুখে কেকা রব করি,
হেরি ব্রজ কুঞ্জবনে,             রাধা রাধাপ্রাণধনে,
       নাচিত যেমতি যত গোকুল সুন্দরী!
উড়িতেছে চাতকিনী            শূন্যপথে বিহারিণী
       জয়ধ্বনি করি ধনী—জলদ-কিঙ্করী!

      হায় রে কোথায় আজি শ্যাম জলধর।
তব প্রিয় সৌদামিনী,           কাঁদে নাথ একাকিনী
      রাধারে ভুলিলে কি হে রাধামনোহর?
রত্নচূড়া শিরে পরি,            এস বিশ্ব আলো করি,
      কনক উদয়াচলে যথা দিনকর।

      তব অপরূপ রূপ হেরি, গুণমণি,
অভিমানে ঘনেশ্বর             যাবে কাঁদি দেশান্তর,
      আখণ্ডল-ধনু লাজে পালাবে অমনি;
দিনমণি পুনঃ আসি          উদিবে আকাশে হাসি;
      রাধিকার সুখে সুখী হইবে ধরণী;

      নাচে গোকুল নারী, যথা কমলিনী
নাচে মলয়-হিল্লোলে          সরসী-রূপসী-কোলে,
     রুণু রুণু মধু বোলে বাজায়ে কিঙ্কিণী!
বসাইও ফুলাসনে             এ দাসীরে তব সনে
     তুমি নব জলধর এ তব অধীনী!

     অরে আশা আর কি রে হবি ফলবতী?
আর কি পাইব তারে          সদা প্রাণ চাহে যারে
     পতি-হারা রতি কি লো পাবে রতি-পতি?
মধু কহে হে কামিনী,         আশা মহামায়াবিনী!
     মরীচিকা কার তৃষা কবে তোষে সতি?

(ব্রজাঙ্গনা কাব্য)

জলধর (Jolodhor) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Ramayon (রামায়ণ) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) রামায়ণ (Ramayon)

সাধিনু নিদ্রায় বৃথা সুন্দর সিংহলে।—
স্মৃতি, পিতা বাল্মীকির বৃদ্ধ-রূপ ধরি,
বসিলা শিয়রে মোর ; হাতে বীণা করি,
গাইলা সে মহাগীত, যাহে হিয়া জ্বলে,
যাহে আজু আঁখি হতে অশ্রু-বিন্দু গলে !
কে সে মূঢ় ভূভারতে, বৈদেহি সুন্দরি,
নাদি আর্দ্রে মনঃ যার তব কথা স্মরি,
নিত্য-কান্তি কমলিনী তুমি ভক্তি-জলে!
দিব্য চক্ষুঃ দিলা গুরু;দেখিনু সুক্ষণে
শিলা জলে;কুম্ভকর্ণ পশিল সমরে,
চলিল অচল যেন ভীষণ ঘোষণে,
কাঁপায় ধরায় ঘন ভীম-পদ-ভরে।
বিনাশিলা রামানুজ মেঘনাদে রণে;
বিনাশিলা রঘুরাজ রক্ষোরাজেশ্বরে।

রামায়ণ (Ramayon) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

Nandankanon (নন্দন-কানন) ~ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর একটি জনপ্রিয় বাংলা কবিতা (Bangla Kobita) নন্দন-কানন (Nandankanon)

লও দাসে, হে ভারতি, নন্দন-কাননে,
যথা ফোটে পারিজাত ; যথায় উৰ্ব্বশী,—
কামের আকাশে বামা চির-পূর্ণ-শশী,—
নাচে করতালি দিয়া বীণার স্বননে ;
যথা রম্ভা, তিলোত্তমা, অলকা রূপসী
মোহে মনঃ সুমধুর স্বর বরিষণে ,—
মন্দাকিনী বাহিনীর স্বর্ণ তীরে বসি,
মিশায়ে সু-কণ্ঠ-রব বীচির বচনে !
যথায় শিশিরের বিন্দু ফুল্ল ফুল-দলে
সদা সদ্যঃ ; যথা অলি সতত গুঞ্জরে ;
বহে যথা সমীরণ বহি পরিমলে ;
বসি যথা শাখা-মুখে কোকিল কুহরে ;
লও দাসে ; আঁখি দিয়া দেখি তব বলে
ভাব-পটে কল্পনা যা সদা চিত্র করে।

নন্দন-কানন (Nandankanon) কবিতাটি ছাড়াও কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt) -এর অন্যান্য কবিতা, গল্প পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন।